কাউনিয়ায় নারী শ্রমিকেরা বৈষম্যের শিকার
প্রকাশ : 2022-05-01 12:37:30১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
১ মে শ্রমিকদের দাবী আদায়ের বিজয়ের দিন, যা মে দিবস হিসেবে পালিত। কিন্তু এ দিনেও রংপুরের কাউনিয়ার শ্রমিকরা বিশেষ করে নারী শ্রমিকেরা চরম মজুরী বৈষম্যের শিকার। যত বৈষম্যে সব যেন শুধু নারীরই জন্য।
সরেজমিনে উপজেলায় ১টি পৌরসভা সহ ছয়টি ইউনিয়ন খুরে দেখা গেছে পুরুষ শ্রমিকের পাশা পাশি নারী শ্রমিকেরা কাজ করছে। বর্তমানে পুরুষ শ্রমিকদের চেয়ে নারী শ্রমিকের কদর অনেক বেশী হলেও বৈষম্যে থেকে তারা রেহাই পাচ্ছে না। নারী শ্রমিক হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমের পর ন্যায্য মজুরী থেকে বি ত হলেও তারা প্রতিবাদ করতে পাচ্ছে না। ধান লাগানো, ধান কাটা, ধান মাড়াই, মাটি কাটা, হোটেল, রাইচ মিল, চাতাল, বিড়ি ফ্যাক্টরী, ইট ভাটা, রাজ মিস্ত্রীর জোগালী, পাথর ভাঙ্গার কাজ সহ সব রকম ভারী কাজে পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরা কাজ করলেও মালিকদের কাছ থেকে নারীরা ন্যায্য মজুরী পায় না। এ উপজেলার অধিকাংশ নারী শ্রমিক স্বামী পরিত্যাক্তা, বিধবা, কেউবা অধিক সন্তানের জননী আবার কারও স্বামী পঙ্গু। অভাবের তাড়নায় তাদের হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করতে হয়। বিনিময়ে মালিকরা যা দেয় তা দিয়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হয়। যদি কেউ মজুরী নিয়ে প্রতিবাদ করে তবে তাদের কাজ থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়। পুরুষ শ্রমিক যেখানে একই কাজ করে পায় ৪০০-৫০০টাকা সেখানে নারী শ্রমিকরা পায় ২৫০-৩০০ টাকা। বৈষম্যের শিকার এরকম দুই নারী শ্রমিক কমেলা বেগম ও রহিমা বেওয়ার সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, জিনিস পত্রের যে দাম মালিক যে টাকা দেয়, তাতে কিছুই হয় না। যা পাই তাই দিয়ে কোন মতে বেঁেচ থাকি খেয়ে না খেয়ে।
একটি বে- সরকারী সংস্থার হিসাব অনুযায়ী জানাগেছে, এ উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার নারী শ্রমিক রয়েছে, এদের মধ্যে কিছু নারীরা ৪০ টি তামাক ভাঙ্গা চাতাল, ১০৪টি মিল চাতাল, ৮টি ইট ভাটায়, ২টি জুট মিল সহ কৃষি খামার, রাজমিস্ত্রীর যোগালী, হোটেলে কাজ করে। তারা শ্রম আইনের আওতায় নেই বরং বৈষম্যের শিকার। নারী জাগরনের অগ্রদূত মহিয়শি নারী বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেনর জন্ম রংপুরের পায়রা বন্দ গ্রামে। তিনি নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্ম নিয়ে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সেই মহিয়শি নারীর জন্মস্থানের জায়গায় নারী শ্রমিকরা আজও বৈষম্যের শিকার। সভ্যতার বিকাশে নারীর অবদানের জয়গান শোনা গেলেও কাউনিয়ায় নারী শ্রমিকদের ঘাম ঝরানো শ্রমের মর্যদা ধুলোয় লুটিয়ে মিশে যেতে বসেছে। যত বৈষম্যে সব যেন শুধু নারীরই জন্য। শ্রম আইন আছে কিন্তু এ উপজেলায় শ্রম আইন নিরবে কাঁদে।