কাউনিয়ায় তিস্তা ভাঙ্গণের খেলায় মেতেছে, বিলীন হচ্ছে জমি-বসতবাড়ি
প্রকাশ : 2025-08-11 18:08:59১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক

বর্ষা শুরুর সাথে সাথে রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা নদী রাক্ষশি রূপ ধারন করে ভাঙ্গা-গড়ার খেলায় মেতেছে। পানি বাড়া-কমায় বিলীন হচ্ছে শতশত হেক্টর ফসলী জমি ও বসতবাড়ি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিরব দর্শকের ভুমিকায়।
সরেজমিনে তিস্তা নদী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকদিনের অবিরাম টানা বৃষ্টি, উজান থেকে ভারতের ছেরে দেয়া পানিতে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে, সেই সাথে পানি কমার সাথে সাথে শুরু হয় ভয়াবহ ভাঙ্গন। ইতোমধ্যে কয়েকদফায় উপজেলার হারাগাছ, শহীদবাগ বালাপাড়া, টেপামধুপুর ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী গ্রামগুলোর শতশত হেক্টর ফসলী জমি ও শতশত বাড়ি ঘর নদী গর্ভে বিণীন হয়েগেছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে নতুন করে শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন। নদী তীরবর্তী মানুষ গুলোর রাত কাটে নিরঘুম। অনেকেই বসত ভিটা হারিয়ে বাধের রাস্তা বা অন্যত্র চলেগেছেন। প্রতিবছর শতশত পরিবার ভুমিহীনে পরিনত হচ্ছেন। নদীর ভাঙ্গা গড়ার খেলায় দুশ্চিন্তায় পরেছেন তিস্তাপারের লোকজন। তিস্তা মহাপরিকল্পনার কথা বছরের পর বছর ধরে চলছে কিন্তু বাস্তবতার মুখ দেখছেনা সাধারন মানুষ। বালাপাড়া ইউনিয়নের গদাই, পাঞ্জরভাঙ্গা, নিজপাড়া, তালুকশাহাবাজ, মধুপুর ইউনিয়নের হরিচরনশর্মা হাজীপাড়া, চর গনাই, চর বিশ^নাথ, চর আজমখাঁ, হয়বতখাঁ এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে, ফসলী জমি নদী গিলে খাচ্ছে। অধিকাংশ বসতভিটার নদী কিনারে চলে এসেছে, যে কোন সময় বিলীন হয়ে যাবে। এসব বসতভিটার লোকজন বাড়ি-ঘর কোথায় সরিয়ে নেবেন, তা নিয়ে বিপাকে পরেছে। হাজিটারী গ্রামের কৃষক মেনসের আলী জানান, তার ২৫ শতক জমির বসত ভিটার প্রায় ২০ শতাংশ আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন মাত্র ৫শতক জমির ওপর বসতভিটা আছে। বর্তমানে নদীর যে অবস্থা তাতে কখনযে ভেঙ্গে নিয়ে যায় তা আল্লাহই ভাল জানেন। নদী ভাঙ্গনে আমি প্রায় নিঃশ হয়ে গেলাম। হাফেজ আলী জানান তার ৩০ শতাংশ আবাদি জমি নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে। এবার বসতভিটা ভাঙ্গনের মুখে। যেকোনো সময় নদীতে বিলীন হতে পারে। হাফেজ আলী বলেন এবার পানি বাড়া-কমার কারণে তাড়াতাড়ি ভাঙ্গন শুরু হইছে। টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নের নদী তীববর্তী ৫টি গ্রামে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানালে ৪/৫ হাজার জিওব্যাগ স্থলে মাত্র ২৫০টি জিওব্যাগ বরাদ্দ পাওয়া গেছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব কে মুঠোফোনে ফোন তিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া আকতার জানান, প্রতিবছর তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে ফসলী জমি কমে যাচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহিদুল হক বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা দ্রুত ভাঙ্গনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।