কাউনিয়ায় চলতি মৌসুমে তিস্তার বালু চরে বাদামের বাম্পার ফলন

প্রকাশ : 2022-06-19 19:57:49১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

কাউনিয়ায় চলতি মৌসুমে তিস্তার বালু চরে বাদামের বাম্পার ফলন

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলে চলতি মৌসুমে বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমানে চরা লে চলছে বাদাম কাটা মাড়াইয়ের উৎসব। ফলন ও দাম পাওয়ার আশায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। সরেজমিনে উপজেলার চরাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে দিগন্ত মাঠ জুড়ে বাদামের চাষ হয়েছে। উপজেলার চর গনাই, চর হয়বত খাঁ, চর বিশ্বনাথ, টাপুর চর, প্রাননাথ চর, চর নাজিরদহ, গুপিডাঙ্গা, ঢুসমারা চর, তালুকশাহবাজ, চর গদাই গ্রামসহ তিস্তার নদীর জেগে উঠা পতিত জমিতে চলতি মৌসুমে বাদামের চাষ বেশী হয়েছে। গ্রাম গুলোতে কৃষক কৃষানী বাদাম কাটামাড়াইয়ের কাজে ব্যাস্ত সময় পাড় করছে। 

চর গনাই গ্রামের বাদাম চাষি দুদু মিয়ার সাথে কথা বলে জানাগেছে চলতি মৌসুমে তিস্তার চরে সে ৬০ দোন (২৫শতকে দোন) জমিতে বাদাম চাষ করেছে। চিলমারী ও দুরাকুটি হাট এবং বিএডিসি থেকে ১৩ মন বীজ ৫২ হাজার টাকা কিনে এনে রোপন করেছে। ফসল তোলা পর্যন্ত ৬০ দোন জমিতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৯লাখ টাকা। সে আশা করছে প্রায় ৪৮০ মন বাদাম পাবে। বর্তমানে বাজারে বাদাম ৩ হাজার ৫শত থেকে ৪ হাজার টাকা মন দরে বিক্রয় হচ্ছে। সে আশা করছে চলতি মৌসুমে বাদাম বিক্রয় করে তার প্রায় ৬লাখ টাকা আয় হবে। সে জানায় ধানের চেয়ে বাদাম অনেক লাভ জনক ফসল। তার দেখা দেখি প্রায় শতাধিক কৃষক বাদাম চাষ করেছে। 

গদাই গ্রামের বাদাম চাষি আলামিন জানান, তিস্তা নদীতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে তার সহ বেশ কিছু কৃষকের বাদাম নষ্ট হয়ে গেছে। একই কথা জানান চরগনাই গ্রামের কৃষক শফিকুল ও ভেলু মিয়া। সরকারী ভাবে কাউনিয়া উপজেলায় ভাল বীজ মাঘ মাস থেকে শুরু করে ফাল্গুন এর ১৫ তারিখের মধ্যে সরবরাহ করতে পারলে তাহলে উপজেলা আরও বাদাম ভাল হবে। বর্তমানে কাউনিয়ায় ভাল বীজের খুবই সংকট। 

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায় চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় রবি মৌসুমে খরিপ-১ বাদাম চাষের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছিল ৭২৫ হেক্টর অর্জন হয়েছে ৭৩০ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র প্রতি হেক্টরে ১.৯৫ মেঃটন। কাউনিয়ার আনেক কৃষক অভিযোগ করে বলেছে তাদের আধুনিক প্রশিক্ষন ও ভাল বীজের অভাবে তারা ভাল করতে চাইলেও তেমন ভাল করতে পাচ্ছে না। তারা সরকারী ভাবে ভাল বীজ সরবরাহ ও আধুনিক প্রশিক্ষনের দাবী জানিয়েছেন। ব্যাংক গুলো ঋণ দিলেও কাগজ পত্রের নানা জটিলতায় কৃষক ঋণ নিতে আগ্রহী হয় না। তারা সহজ ভাবে এনজিও বা দাদান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চরা সুদে ঋণ নিয়ে থাকে। এলাকার কৃষক নিজ চেষ্টায় চরা লে এ বছর বাদাম চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ পারভীন জানান, উপজেলায় বাদাম চাষে ২০টি প্রদর্শনী প্লোট রয়েছে, রবি চিনাবাদাম ৮, ৯, বিনা ৯ সহ উপজেলায় মাইজচর, বাসন্তি, বারি ৫/৬ ও কিছু স্থানীয় জাতের বাদাম চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে হঠাৎ বন্যায় তিস্তার চরের কিছু বাদাম নষ্ট হলেও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষক দামও পাচ্ছে ভাল। তিস্তার চরা লের জমি বাদাম চাষের উপযোগি। তিস্তার পতিত জমি গুলোতেও এবার বাদাম চাষ হয়েছে।