কাউনিয়ায় গরুর দুগ্ধ উৎপাদন খামার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে নজরুল 

প্রকাশ : 2021-07-30 16:18:04১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

কাউনিয়ায় গরুর দুগ্ধ উৎপাদন খামার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে নজরুল 

যুবক-যুবতীদের চাকরী নামক সোনার হরিনের পিছে না ছুটে খামার করে নিজের এবং অন্যের কর্মসংস্থান সৃষ্টির আহবান জানিয়েছেন নজরুল ইসলাম। কাউনিয়ায় গরুর দুগ্ধ উৎপাদন খামার করে সফলতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন খামারী নজরুল ইসলাম।

সরেজমিনে উপজেলার কুর্শা শিবু মালিপাড়া গ্রামে প্রচেষ্টা খামারে গিয়ে কথা হয় খামারী নজরুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান গ্রামীন ব্যাংকের চাকরী শেষে কিছুটা হতাশায় পরেন তিনি। তার স্ত্রীর পরামর্শে ৩টি গরু দিয়ে ২০১৪ সালে প্রথম খামার শুরু করেন। প্রথমের দিকে তেমন লাভ না হলেও ধীরে ধীরে তার খামারে লাভ বাড়াতে থাকেন। বর্তমানে তার খামারে ২৪টি দুধের গরু রয়েছে। এর মধ্যে বাহাদুর তার নিজের একটি গরুর বাছুর। বাছুরটি যখন জন্মায় তিনি স্বপ্ন দেখেন বাছুরটিকে কোন মোটাতাজা করন পদ্ধতি ব্যবহার না করে দেশীয় পদ্ধতিতে বড় করবেন। যেই কথা সেই কাজ। শুরু করেন তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে পরিশ্রম। স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাকে সহযোগিতা করেছে তার স্ত্রী ও তার ছোট ভাই। নিজস্ব পদ্ধতিতে তিনি আলাদা একটি সেডে রেখে বাহাদুরকে বড় করতে থাকেন। বাহাদুরের এখন বয়স ৩৩ মাস। তার ওজন হয়েছে প্রায় ৪০ মন। ২৫ লাখ টাকা বিক্রির আশা। 

বাহাদুরকে এক নজর দেখার জন্য দুর দুরান্ত থেকে মানুষ আসে। নজরুল ইসলাম জানায় দেশীয় খাবার দিয়ে এবং ইনজেকশন না দিয়ে গরু বড় করা সম্ভব সেটি আমি প্রমান করতে চেয়েছি, সেই সাথে বেকার যুবকদের বুঝাতে চেয়েছি চাকরীর পিছে না ছুটে সৎ ভাবে একাগ্রতার সাথে নেক নিয়তে খামার করলে সে অন্যকে চাকরী দিতে পারবে। তিনি বর্তমানে প্রতিদিন ১২০ লিটার দুধ বিক্রি করেন। তার খামারে প্রতি মাসে ১লাখ ৬০ হাজার টাকা আয় হয়। এর মধ্যে ৪ জন কর্মচারীর বেতন, গরুর খাবার, বিদ্যুৎ বিল বাবাদ খরচ হয় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রতিমাসে আয় হয় ৫০ হাজার টাকা। ৩ লাখ টাকা দিয়ে খামার শুরু করে এখন তার খামরে প্রায় ৬০ লাখ টাকার গরু আছে। তিনি ১ একর ২০ শতক জমিতে গরুর খাদ্যর জন্য পাকচং ঘাস চাষ করেছেন। বর্তমানে ঘাসের ব্যপক চাহিদা রয়েছে, যাদের জমি আছে তারা ঘাস চাষ করেও আয় করতে পারেন। কৃষি বিভাগের সহায়তায় তিনি গরুর গোবর দিয়ে নতুন করে কেচো সার তৈরীর সেড করেছেন। তিনি আশা করছেন এখান থেকে তার বার্তি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হবে। তিনি বায় গ্যাস করেছেন ফলে তার বাড়িতে রান্না করার জন্য কোন খড়ি কিনতে হয়না। তিনি জানান একগ্রতার সাথে ধর্য্য নিয়ে খামার করলে সফলতা অবশ্যই আসবে। 

উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মনোজিৎ কুমার সরকার জানান, নজরুল একজন সফল খামারী। পুষ্টির চাহিদা পুরনে তিনি এলাকায় অবদান রাখছেন, সেই সাথে নিজের ও অন্যের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। 

জেলা প্রানী সম্পদ অফিসার সিরাজুল হক জানান রংপুর জেলায় সবচেয়ে বড় মাপের ষাঁড় গরু নজরুলের খামারে। দেশীয় পদ্ধতিতে তিনি বাহাদুর কে এতো বড় করেছেন। তিনি একজন সফল খামারী। নজরুল ইসলাম কাউনিয়ায় এখন একজন সফল দুগ্ধ উৎপাদন খামারী হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।