কাউনিয়ায় কৃষিতে অপার সম্ভাবনা জলপাইয়ের বাম্পার ফলন
প্রকাশ : 2024-11-15 18:04:53১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশের মানুষের কাছে জলপাই অতি পরিচিত মুখরোচক ফল। কাঁচা ও পাকা যে কোন অবস্থায় এ ফল খাওয়া যায়। তবে আচার, চাটনি, জ্যাম, জেলি ও তেল তৈরিতে বেশী ব্যবহার হয়। চলতি মৌসুমে কাউনিয়ায় জলপাইয়ের বাম্পার ফলনে রফতানি হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। দাম ভালো পাওয়ায় জলপাই চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। জলপাই চাষ গ্রামীন অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ হওয়ার এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা গাছ থেকে জলপাই সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পাইকাররা বাড়ি বাড়ি ঘুরে জলপাই সংগ্রহ করে একজায়গায় একত্রিত করে বিভিন্ন জেলায় রফতানি করছেন। কাউনিয়ায় মৌসুমি ফল জলপাইয়ের বাম্পার ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার ১টি পৌর সভাসহ ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে বাগান ও বাড়ির আঙ্গিনায় প্রায় ৩ হেক্টর জমিতে জলপাই চাষ করা হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় মৌসুমে শুরু থেকেই পাইকারি ব্যবসায়ীরা জলপাই সংগ্রহে ব্যাস্ত সময় পার করছে। ভালো দাম পাওয়ায় দিন দিন জলপাই চাষে ঝুকছে কৃষকেরা। বর্তমানে হাট-বাজারে প্রতিকেজি জলপাই ১৮ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নিজপাড়া গ্রামের জলপাই চাষী নাসির উদ্দিন বলেন, বাড়ির সামনে ও বাগানে লাগানো ৪টি গাছ থেকে জলপাই বিক্রি করে ভালো দাম পেয়েছি। ব্যবসায়ীরা বাড়িতে এসে গাছ কিনে নিয়েছে। স্থানীয় জলপাই ব্যবসায়ী আনছার আলী ও ইসমাইল হোসেন জানান, তারা বিভিন্ন বাড়ি ও বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে জলপাই কিনে চট্রগ্রাম, ফেনী, যশোহর সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করছেন। গাছ থেকে জলপাই পারা থেকে শুরু করে বস্তায় তোলা পর্যন্ত এ কাজে বেশ কিছু লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান কাউনিয়া থেকে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০মন জলপাই বিভিন্ন জেলায় ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে সরবরাহ হয়ে থাকে। কমপক্ষে ২০ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জলপাই কিনে জেলার বাহির থেকে আসা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। জলপাই কেনা-বেচা চলবে প্রায় ২ মাস। জলপাইয়ের গুণাবলি এত বেশি যে, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে কবিরাজি বিদ্যায় লেখা আছে জলপাইয়ের বহুবিধ উপকারিতা। জলপাই-এ নানা পুষ্টিকর উপাদান, যেমন- ভিটামিন, মিনারেল অর্থাৎ খনিজ পদার্থ এবং ভেষজ উপাদান, আয়রন, খাদ্যআঁশ, কপার, ভিটামিন-ই, ফেনোলিক উপাদান, অলিক অ্যাসিড এবং বিভিন্ন প্রকারের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান বিদ্যমান। কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ তানিয়া আকতার জানান, চলতি মৌসুমে জলপাইয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ২১৮ মেঃ টন। জলপাই গাছ লাগাতে পারলেই হয়। খুব বেশি পরিচর্চার প্রয়োজন হয় না। দিতে হয় না সার ও সেচ। ফলে এটি একটি লাভজনক ফল। একটি গাছে কমপক্ষে দেড় থেকে ২মণ জলপাই ধরে। বাজারে দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। জলপাইর ক্রমবর্ধমান চাহিদা ভবিষ্যতে এ উপজেলার অর্থনীতিতে আরও ব্যাপক গতি সঞ্চার করবে। জলপাই উৎপাদন বাড়াতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।