কাউনিয়ায় ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা গুলো হারিয়ে যেতে বসেছে

প্রকাশ : 2024-09-22 19:12:33১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

কাউনিয়ায় ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা গুলো হারিয়ে যেতে বসেছে

আধুনিক সভ্যতার যুগে প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে বর্তমান সময় হয়ে উঠেছে অনেকটাই যান্ত্রিক। সেই যান্ত্রীকতার যুগে কাউনিয়ায় ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা গুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে বয়স্ক মানুষদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, পড়াশুনা যেমন ছেলেমেয়েদের মানসিক বিকাশ ঘটায়, তেমনি শারীরিক বিকাশ ঘটাতে খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই। আগেরকার দিনে গ্রামাঞ্চলে হা-ডু-ডু, কাবাডি, নৌকাবাইচ, কানামাছি, গোল্লাছুট, দাড়িয়াবান্দা, মোরগ যুদ্ধ, ছিবুড়ি, বলি খেলা ও লাঠিখেলার প্রতিয়োগিতার আয়োজন করা হতো। বিভিন্ন গ্রামে এসব খেলার জমজমাট আয়োজন হতো। রাজিব গ্রামের আলহাজ ইসমাইল হোসেন বাবু জানান, এ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা গ্রামবাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য এসব গ্রামীণ খেলাধুলা তো করেই না, নাম জানে কিনা সেটিও এখন বড় প্রশ্ন। অথচ এক সময় এ সমস্ত খেলাধুলাকে বাদ দিয়ে বাঙালি ঐতিহ্যের পূর্ণতাকে কল্পনাও করা যেত না। বর্তমানে এসব ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার প্রচলন না থাকায় গ্রামীণ জনপদ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে হাজার বছরের বাঙালীর ঐতিহ্য। এক সময়ের জনপ্রিয় খেলা হা-ডু-ডু সহ গ্রামীণ খেলা গুলো এখন অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। আধুনিক খেলা এবং যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততার কাছে হেরে গেছে গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় দেশীয় গ্রামীণ খেলা গুলো। তাইতো নতুন প্রজন্ম জানে না এ খেলা সম্পর্কে। গদাই গ্রামের গফুর আলী বলেন, আমাদের ছোটবেলায় গ্রামে বিদ্যুৎ, মোবাইল, ইন্টারনেট, ঘরে ঘরে রঙিন টেলিভিশন ছিল না। সন্ধ্যার পর বাড়ি বাড়ি কেরোসিনের বাতি ও হারিকেন জ্বালান হতো। এত লোকজনও ছিল না তখন। বিনোদনের বড় মাধ্যম ছিল রেডিও আর গ্রামীণ খেলাধুলা। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের খেলা গুলো। মোফাজ্জল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আজিজুল ইসলাম বলেন, এখন মানুষের সময় নেই। গ্রামীণ খেলা আয়োজন করবে এমন উদ্যোগ নেয়ার মানুষও নেই। ইনডোর গেম বেড়ে গেছে। মানুষ মোবাইল বা সোশাল মিডিয়ায় আসক্ত হচ্ছে। আধুনিকতার ছোয়ায় মানুষের মধ্যে গ্রামীণ খেলার আবেদন কমে গেছে। গ্রামীন খেলা হারিয়ে যাচ্ছে। এখন আর কোনো উৎসবে বা বিশেষ দিবসে এ খেলার আয়োজন হয় না। তাই নতুন করে খেলোয়াড়ও তৈরি হচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ধান কাটার পর খোলা মাঠে গ্রামীন খেলার আয়োজন করা হতো। চারদিকে বিরাজ করতো আনন্দ-উচ্ছ্াস। গ্রামজুড়ে চলতো মাইকিং প্রচার-প্রচারণা। মোবাইল গেমসের কারণে এখন আর বিকেলে মাঠে দেখা যায় না কিশোর-কিশোরীদের। গোল্লাছুট, কানামাছি, বউচি, পাইক্কা, লুকোচুরিসহ বিভিন্ন খেলা। কালের আবর্তে হারিয়ে যেতে বসা গ্রামীণ খেলা গুলো টিকিয়ে রাখা এবং নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করতে সরকারী বেসরকারী উদ্যোগ গ্রহনের দাবী এলাকাসীর।