কাউনিয়ায় আমন ধান কাটা শুরু
প্রকাশ : 2022-11-10 19:01:44১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
রংপুরের কাউনিয়ায় আমন ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। সোনালী ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কৃষকের উঠান ভরে থাকছে আমনের ঘ্রাণে। ধান মাড়াইয়ে সমানতালে পুরুষের পাশাপাশি কাজ করছেন নারীরা। আশানুরুপ ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে তবে খরচের তুলনায় দাম পাওয়া নিয়ে চিন্তায় আছে।
কাউনিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে ১১ হাজার ৪০০শত ৩২ হেক্টর জমিতে আমনের চাষের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছিল অর্জন হয়েছে ১১ হাজার ৪০০শত ৫০ হেক্টর জমিতে। এপর্যন্ত আমন ধান কাটা হয়েছে ২২৫০ হেক্টর জমির। প্রতি হেক্টরে চাল আকারে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে হাইব্রিড জাতের ৩ দশমিক ৭৫ এবং উফসি জাতের ২ দশমিক ৯ মেট্রিক টন। কাউনিয়ায় হেক্টরে ৩.৪ মেঃটন চাউল উৎপাদন হয়েছে। কয়েকজন কৃষক বলেছেন, এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদনে তাদের খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা। বর্তমানে ৪০ কেজির প্রতিমণ ধান আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকায়। চাষ, সেচ, সার, কীটনাশক সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আমনের প্রতি বিঘায় ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ বেড়েছে।
বল্লভবিষ্ণু গ্রামের আদর্শ কৃষক সোলেমান আলী ও ভুতছারা গ্রামের কৃষক আঃ সামাদ জানান, ১০ বিঘা জমিতে তিনি আমনের চাষ করেছেন। প্রতি বিঘায় আমন উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। প্রতি বিঘাতে ধান আশা করছেন ১৮ থেকে ২০ মণ। এতে প্রতি মণ ধান উৎপাদনে তার খরচ হয়েছে প্রায় এক হাজার টাকা। উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের কৃষক প্রহলাদ চন্দ্র বলেন, আবাদের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় আমন উৎপাদনে সেচের কোনো বিকল্প ছিল না। বিদ্যুত ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে সেচ খরচ বেড়েছে। ধানে কিছু পোকাও আক্রমণ করেছিল। তাই কীটনাশকেও বাড়তি টাকা লেগেছে। এতে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। ধানের দাম আরেকটু বাড়তি হলে ভালো হতো।
ধানকাটা শ্রমিক আব্দুল কাদের বলেন, এক বিঘা জমির ধান কেটে কৃষকের উঠানে এনে দিতে সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা মজুরি নিচ্ছেন। তবে এটি শ্রমিকের চাহিদার ওপর নির্ভর করে। যে এলাকায় শ্রমিক যত বেশি, সে এলাকায় মজুরি তত কম। কাউনিয়া তকিপল হাটের ধান ব্যবসায়ি দুলাল ও মান্নান জানান, গত বছরের চেয়ে এ বছর কৃষক ধানের দাম বেশি পাচ্ছেন। ব্যবসায়িরা আমনের মোটা ধান প্রতিমণ কিনছেন ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকায়। আর চিকন ধানের দাম সাড়ে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানাজ পারভীন বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আমনের উৎপাদন ভাল হয়েছে এবং লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে আশা করছি। সরকারী ভাবে ধান চাউল ক্রয় শুরু হলে কৃষক দামও ভালো পাবে।