কলা গাছের তন্তু থেকে শাড়ি
প্রকাশ : 2023-04-02 12:39:47১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
কলা গাছের তন্তু থেকে তৈরি সুতা আর সেই সুতা তাঁতে বুনে তৈরি করা হয়েছে শাড়ি। বান্দরবানে বোনা হয়েছেে এই শাড়ি। মৌলভীবাজারের মনিপুরী তাঁত শিল্পী রাধাবতী দেবী জেলা প্রশাসকের অনুরোধে বান্দরবানে এসে প্রথমবারের মতো কলা গাছের তন্তু থেকে এ শাড়িটি বুনেছেন।
জানা যায়, প্রথম পর্যায়ে কলাগাছ থেকে তন্তু তৈরি করা হতো। পরে প্রশিক্ষণ দিয়ে এ তন্তু থেকে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী তৈরি করা হয়। সর্বশেষ এ তন্তু দিয়ে মনিপুরী তাঁত শিল্পী রাধাবতী দেবী ১৫ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে শাড়িটি তৈরি করতে সক্ষম হন।
মণিপুরী তাঁতশিল্পী রাধাবতী দেবী জানান, জেলা প্রশাসকের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বান্দরবানে এসে তিনি শাড়িটি বুনেছেন। তার এলাকায় যারা মনিপুরী শাড়ি বুনেন সবাই তাকে বলেছিলেন এ দায়িত্ব না নিতে। তারপরও তিনি এ চ্যালেঞ্জ নেন এবং সফল হন।
রাধাবতী জানান, ৭৫ সাল থেকেই তিনি সুতা দিয়ে শাড়িসহ নানা কিছু তৈরি করতেন। কিন্তু কলাগাছের সুতা দিয়ে শাড়ি তৈরি ছিল তার কাছে একেবারেই নতুন। যেহেতু কলাগাছ থেকে সুতা তৈরি হয়েছে আর সেই সুতা দিয়ে শাড়ি বানাতে আপত্তি নেই। জেলা প্রশাসকের অনুরোধের পর তিনি নেমে পড়েন কাজে। দীর্ঘ ১৫ দিনের চেষ্টায় আরো তিনজন সহযোগীকে নিয়ে তাঁতে বসে তৈরি করে ফেলেন জামদানি ডিজাইনের কলা গাছের সুতা দিয়ে তৈরি শাড়ি। সাধারণ সুতায় ৫০০ গ্রাম দিয়ে যেখানে একটি শাড়ি তৈরি করা যায় সেখানে কলাগাছের সুতায় শাড়ি তৈরি করতে লাগে প্রায় এক কেজি।
জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, ‘আমি জানি না বাংলাদেশের আর কোথাও এখন পর্যন্ত কলা গাছের সুতা থেকে কেউ শাড়ি তৈরি করেছে কিনা। যদি না করে থাকে তবে এটিই হবে বাংলাদেশে কলাগাছের সুতার তৈরি প্রথম শাড়ি।’
তিনি বলেন, ‘এটা আমার স্বপ্নের প্রজেক্ট। পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে প্রথমে বান্দরবান সদর উপজেলায় শুরু করার পর বিভিন্ন উপজেলায়ও ছড়িয়ে দিয়েছি।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ইতোমধ্যে কলাগাছের সুতা দিয়ে তৈরি নানা ধরনের হস্তশিল্প মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। নানা জায়গায় তা সমাদ্রিত হয়েছে। এখন শাড়ি তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বান্দরবানের উৎপাদিত পণ্য দেশে-বিদেশে রফতানির পাশাপাশি গ্রামীণ নারীদের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক সাফল্যে বড় অবদান রাখবে।’
এ সময় তিনি এ কাজে সহায়তা করার জন্য শাড়ী তৈরির কারিগর রাধাবতী দেবী, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আতিয়া চৌধুরী, বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়য়ের প্রভাষক সাই সাই উ নিনিসহ সহযোগী সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।