কর্মবিরতিতে প্রাথমিকের শিক্ষকরা

প্রকাশ : 2025-11-09 13:37:38১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

কর্মবিরতিতে প্রাথমিকের শিক্ষকরা

 

দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড, জলকামান নিক্ষেপে শতধিক আহত ও পাঁচজন শিক্ষককে আটকের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো.জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের পদত্যাগ দাবি জানিয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জোট ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’। 

রবিবার (৯ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি থেকে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন শিক্ষকরা। 

দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায় ও শাহবাগে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিও শুরু করেছেন সহকারী শিক্ষকরা।

এর আগে শনিবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষকদের ‘কলম বিসর্জন’ কর্মসূচিতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে বহু শিক্ষক আহত হন।

পুলিশি নির্যাতনের পর শহীদ মিনারে গভীর রাতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন শিক্ষকরা।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শহীদ মিনারে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি এবং সারাদেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা।

শিক্ষক জোটের এই আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (কাসেম-শাহীন) সভাপতি প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কাসেম, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ, ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সমন্বয়ক মু.মাহবুবুর রহমান এবং অন্যতম সমন্বয়ক মোহাম্মদ আনোয়ার উল্যা। এই নেতাদের মধ্যে আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসায় রয়েছেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি। আর গ্রেফতার হয়েছেন ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সমন্বয়ক মু.মাহবুবুর রহমান। 

এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে অংশ নিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় ধাপে সুপারিশ পাওয়া সহকারী শিক্ষকরাও।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “আমাদের শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড হামলাসহ পুলিশি নির্যাতনের কারণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং টেলিভিশনে আমাদের দাবিতে অন্যয় উল্লেখ করায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন শিক্ষকরা। রবিবার সকাল থেকে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। রাতে শিক্ষকরা শহিদ মিনারেই অবস্থান করেছেন। সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে শনিবার দুপুরেই।”

শিক্ষকদের এই আন্দোলন কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়ে তৃতীয় ধাপে সুপারিশ পাওয়া সহকারী শিক্ষক মো. মহিব উল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “শনিবারের পুলিশি নির্যাতনে ১০৯ জন শিক্ষক আহত হয়েছেন। গ্রেফতার করা পাঁচজন হচ্ছেন— প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন সমন্বয়/আহ্বায়ক জয়পুরহাটের সহকারী শিক্ষক মু. মাহবুবুর রহমান, পটুয়াখালীর সহকারি শিক্ষক লিটন মিয়া, জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের সহকারী শিক্ষক আব্দুল কাদের, ধামরাইয়ের সহকারী শিক্ষক শরিফুল ইসলাম এবং কুমিল্লার সহকারী শিক্ষক মো. সোহেল।”

উল্লেখ্য, দশম গ্রেড বাস্তবায়নসহ তিন দফা দাবিতে ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সম্মিলত কর্মসূচির ডাক দেন।

শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো:

১️. সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন প্রদান।

২. উচ্চতর গ্রেডের জটিলতার স্থায়ী সমাধান।

৩️. সহকারী শিক্ষকদের শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।