করোনায় আপাতত গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ ব্রাজিলের

প্রকাশ : 2021-04-18 12:45:32১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

করোনায় আপাতত গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ ব্রাজিলের

বিশ্বে করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশগুলোর তালিকায় উপরের দিকেই অবস্থান ব্রাজিলের। করোনাভাইরাস ধরন পাল্টে দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এতে দেশটির পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এমন সময় দেশটির নারীদের উদ্দেশে বিশেষ পরামর্শ দিয়েছে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বলা হয়েছে, যদি সম্ভব হয় মহামারিকালে গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকার জন্য। সম্প্রতি একথা বলেছেন ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেক্রেটারি রাফায়েল কামারা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এখবর জানিয়েছে।

করোনায় মৃত্যুর দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত লাতিন আমেরিকার দেশটিতে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি মানুষের। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪২ জন।

ব্রাজিলের একাধিক শহরে ফের নতুন করে থাবা বসিয়েছে মারণ এই ভাইরাস। করোনার নতুন স্ট্রেনের কারণে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর পরিমাণ আরও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সমালোচকদের মতে, ব্রাজিল সরকারের একাধিক ভুল সিদ্ধান্তও করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। তবে এর মধ্যে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এমন ‘পরামর্শ’ দিলো।

এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রাজিলের নারীদের উদ্দেশে কামারার পরামর্শ, যদি সম্ভব হয়, নারীরা এই সময়ে গর্ভধারণ হওয়া থেকে বিরত থাকুন। অন্তত পরিস্থিতি যতক্ষণ না স্বাভাবিক হচ্ছে। যাতে করে তাদের গর্ভধারণে কোনও সমস্যা না হয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা ৪২-৪৩ বছর বয়সের নারীদের গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকতে বলছি না। অপেক্ষাকৃত কম বয়সের নারী, যাদের পক্ষে সম্ভব, তারা চাইলে কিছু সময় অপেক্ষা করতেই পারেন।

কামারা জানান, মূলত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর প্রচণ্ড চাপ এবং আগের তুলনায় করোনার পি১ ধরণ অনেক বেশি সংক্রমণযোগ্য হওয়াতে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তার মতে, বিশেষজ্ঞদের ক্লিনিক্যাল অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে করোনার নতুন এই পি১ ধরনটি অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি আগ্রাসী। করোনার আগের ধরনে তৃতীয় ট্রিমেস্টার ও প্রসবের সময় আক্রান্ত হয়েছেন নারীরা। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে দ্বিতীয় এবং অনেক সময় প্রথম ট্রিমেস্টারেও আক্রান্ত হচ্ছেন এবং অনেকের অবস্থা গুরুতর পর্যায়ে যাচ্ছে।

গবেষকদের দাবি, এই ভাইরাস নিজের চরিত্র এমন ভাবে বদল করেছে যে কোনও অ্যান্টিবডির প্রভাবই নাকি তার উপর পড়ছে না। তারা বলছেন, মিউটেশনের মাধ্যমে যে পরিবর্তনগুলো হচ্ছে তা ভাইরাসটিকে আরও টিকা প্রতিরোধী করে তুলতে পারে। টিকা ভাইরাসের স্পর্শক প্রোটিনগুলো অকার্যকর করার কাজটিই করে।

ব্রাজিলের অ্যামাজন অঞ্চলের মানাউস শহরে কর্মকরত ফিওক্রুজের বিজ্ঞানী ও সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধানের অন্যতম গবেষক ফেলিপে নাভেকা বলেছেন, অ্যান্টিবডির প্রতিক্রিয়া এড়াতে ভাইরাসটি ফাঁকি দেওয়ার আরেকটি কৌশল তৈরি করছে বলে তারা মনে করছেন।

নাভেকা জানান, ভাইরাসটির পরিবর্তনগুলো আরও আগ্রাসী দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনটির মিউটেশনে যেমনটি দেখা গিয়েছিল সেরকম হ তে পারে বলে মনে হচ্ছে, যেটি টিকার কার্যকারিতা যথেষ্ট পরিমাণে হ্রাস করতে পারে। তিনি বলেন, এটি সত্যিই খুব উদ্বেগজনক কারণ ভাইরাসটি এর বিবর্তনের গতি বাড়িয়ে চলছে।