কবরীর জন্য কান্না, আলমগীর-ফারুককে নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন শবনম

প্রকাশ : 2021-05-04 11:48:27১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

কবরীর জন্য কান্না, আলমগীর-ফারুককে নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন শবনম

অভিনেত্রী কবরীর মৃত্যুতে মন খারাপ শবনমের। সিঙ্গাপুরে অভিনেতা ফারুক ও বাংলাদেশে চিকিৎসাধীন আলমগীরের জন্য ভীষণ চিন্তিত তিনি। অনুজ এ দুই শিল্পী কবে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন, এ নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন শবনম। সম্প্রতি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে এসব কথা জানালেন অভিনেত্রী। আলাপকালে কণ্ঠ জড়িয়ে আসছিল তাঁর, একপর্যায়ে কাঁদছিলেন কবরীর কথা মনে করে।

বেশ কিছুদিন হলো পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থান করছেন অভিনেত্রী শবনম। সেখানে দূরসম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আছেন তিনি। জানালেন, সেখানে বসেই তিনি পেয়েছিলেন সহকর্মী সারাহ বেগম কবরীর মৃত্যুর খবর।

শবনম বলেন, ‘কবরী খুব তাড়াতাড়িই চলে গেল। তার তো এখনো যাওয়ার সময় হয়নি। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা তো তাঁর পরিকল্পনামতোই কাজ করবেন, সেখানে আমাদের কারও হাত নেই। তারপরও ভাবতে অবাক লাগে, হাসপাতালে গেল, কয়েক দিন চিকিৎসা নিল। হঠাৎ শুনি কবরী মারা গেছে! শুনেছি, সিনেমা পরিচালনা করছিল। খবরটা প্রথমে দেখি ফেসবুকে। দেখে তো আমি হতভম্ব।’

কবরীর সঙ্গে ঠিক কবে, কখন শেষ দেখা হয়েছিল, দিনক্ষণ মনে করতে পারলেন না শবনম। তবে সাক্ষাতের স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, ‘দেখা হলেই সে আগে সালাম দিত, খুব সম্মান করত। আমরা অবশ্য চলচ্চিত্রে কাছাকাছি সময়েই এসেছি বলা যায়, কিন্তু তার চেয়ে আমি বড় ছিলাম।’ কবরীর মূল্যায়ন করতে গিয়ে শবনম বলেন, ‘অভিনয়শিল্পী হিসেবে কবরী ভালো, খুবই ভালো। আমি তো বলব, অসাধারণ। কেবল মিষ্টি হাসি দিয়েই সে মানুষের মন জয় করে নিয়েছে। ওর হাসি তো ট্রেডমার্ক। এ কারণেই সবাই তাকে মিষ্টি মেয়ে বলে ডাকত। প্রথম ছবি সুতরাং-এই কবরী প্রমাণ করে দিয়েছিল সে সত্যিকারের শিল্পী, কত বড় মাপের শিল্পী হতে যাচ্ছে। লম্বা সময় রাজত্ব করতে এসেছে। সেটাই করেছে সে।’

কবরী-শবনম লম্বা সময় ধরে ঢালিউডে কাজ করেছেন। যদিও একসঙ্গে কোনো ছবিতে অভিনয় করা হয়নি। তবে এফডিসিতে পাশাপাশি শুটিং থাকলে তাঁদের দেখা হতো। তিনি বলেন, ‘কবরী সমসাময়িকদের সঙ্গেও খুব আন্তরিক ছিল। তার পরে যারাই চলচ্চিত্রে এসেছিল, তাদের ব্যাপারেও ভীষণ সহযোগিতাপূর্ণ ছিল। চলচ্চিত্রে তো আমরা আরেকটি পরিবার, তাই দেখা না হলেও সবাইকে নিয়ে সবার মধ্যে কথা হতো। সে হিসেবে আমি যতটা জানতে পেরেছি, কবরী অসাধারণ একজন মানুষ ছিল।’ জানালেন, রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মিতা হকের মৃত্যুর খবরটাও কষ্ট দিয়েছে তাঁকে।

অভিনেতা ফারুকের খবর নিয়মিত পাচ্ছেন শবনম। ফারুকের অচেতন থাকার খবর, আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তরের খবরও জানেন তিনি। পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত হয়ে আলমগীরের হাসপাতালে ভর্তির খবরে চিন্তিত শবনম। তাঁদের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

কয়েক মাস আগে পাকিস্তান সফরে যান এই অভিনেত্রী। ওঠেন ফয়সালাবাদের এক ভক্তের বাড়িতে। তিনি বলেন, ‘সাজিয়া আমার ভক্ত। আমি যখন পাকিস্তানে অভিনয় করি, তখন থেকে সে আমার ছবি দেখে। ৩০ বছর ধরে আমাদের যোগাযোগ। কখনো দেখা হয়নি। এবার দেখা হলো, তার বাড়িতে মেহমান হিসেবে থাকাও হচ্ছে।’

সত্তরের দশকের শুরুতে শবনম পাকিস্তানের ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে নিজের স্থান শক্ত করে তোলেন। ১৯৮৮ সালের দিকে শবনম বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের চলচ্চিত্রে সমানতালে অভিনয় করতে থাকেন। নব্বইয়ের দশকের শেষ ভাগে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। পাঁচ দশকের অভিনয়জীবনে ১৮০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

ঢাকায় কবে ফিরবেন জানতে চাইলে শবনম বলেন, ‘করোনার কারণে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ আছে। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আসা সম্ভব হচ্ছে না। সবকিছু স্বাভাবিক হলে তবেই ঢাকায় ফিরব।’