কঠোর, কিন্তু কতটা কঠোর হবে
প্রকাশ : 2021-04-10 13:21:35১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামিকাল রোববার শেষ হবে প্রথম দফা সাতদিনের লকডাউন। সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে এরপর আগামি ১৪ এপ্রিল থেকে দেয়া হবে দ্বিতীয় দফা লকডাউন। সে লকডাউন হবে অত্যন্ত কঠোর। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মানুষ বাাঁচতে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেছেন।
এ কথা অস্বীকার করার যো নেই যে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যে হারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণের কোনো বিকল্প নেই। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তাদের অভিমত গণমমাধ্যমে তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে তারা প্রথম দফা লকডাউনের করুণ পরিণতি দেখে যারপরনাই হতাশাও ব্যক্ত করেছেন। বিশেষ করে লকডাউন ঘোষণার ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা এবং এলামেলো সিদ্ধান্তে তারা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। বস্তুত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া প্রথম দফা লকডাউন অক্ষািরক অর্থে কোনো লকডাউন ছিল, তা বলার উপায় নেই। বইমেলা খোলা, অফিস-আদালত চালু রেখে যখন শুধু গণপরিবগণ বন্ধ করা হলো, সমালোচনার ঝড় উঠেছিল তখনই। পরবর্তীতে আমরা দেখলাম প্রতিবাদ ও দাবির মুখে গণপরিবহণ চালুর অনুমতি দেয়া হলো, সে সাথে শপিংমল ও বিপনী বিতান খোলারও অনুমতি দেয়া হলো। তাহলে আর লকডাউন রইল কোথায়? চলতি লকডাউনের শুরুতে গ্রামনগরবার্তার সম্পাদকীয়তে ঘোষিত লকডাউন অকার্যকর হওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছিল। আমাদের সে আশঙ্কা যে অমূলক ছিল না, পরবর্তীতে তা দেখা গেছে।
পূর্ববর্তী লকডাউনগুলোর অবস্থাদৃষ্টে সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, এবারের ‘কঠোর লকডাউন’ আসলেই কতটা কঠোর হবে। তা কি শুধু সরকারের কর্তাব্যক্তিদের কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি বাস্তবেকও দেখা যাবে। যে লকডাউনটি শেষ হয়ে যাচ্ছে, তার বিরুদ্ধ রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ মিছিল করতে দেখা গেছে। মূলত তাদের প্রতিবাদ ও দাবি এবং ব্যাপক জনসাধারণের লকডাউনকে থোড়াই কেয়ার করে, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যথেচ্ছ চলাফেরার করাণেই সরকার তার নির্দেশনা শিথিল করেছে। এবার কঠোর লকডাউন শুরু হলে আবার যে একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না, তার গ্যারাণ্টি কী? আবার যদি ব্যবসায়ী-শ্রমজীবীরা আন্দোলনে নামে সরকার কি আবারও তাদের কাছে নতি স্বীকার করবে?
আমরা আগের সম্পদকীয়তে কারফিউর মতো লকডাউনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলাম। আমাদের সে কথার যথার্থতা প্রমাণিত হয়েছে। আমরা মনে করি, হয় কার্যকর লকডাউন দেয়া হোক, না হয় জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হোক। নইলে নামকাওয়াস্তে লকডাউন দিয়ে জনদুর্ভোগ বাড়ানোর কোনো অর্থ হয় না।