এনসিপির নেতৃত্বেই জাতীয় সরকার, পাবে ৩০০ আসন : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

প্রকাশ : 2025-06-22 18:34:54১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

এনসিপির নেতৃত্বেই জাতীয় সরকার, পাবে ৩০০ আসন : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃত্বেই আগামীতে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আজকে আমাদের একটি গণতান্ত্রিক পুনরুদ্ধারের দিন। ছাত্রদের নেতৃত্বে বাংলাদেশে একটি গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল।

নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার পরই আগামী নির্বাচনে দলের ফলাফল কেমন হবে তা নিয়ে কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেছেন, ‘নিবন্ধন পাওয়ার পর এনসিপির নেতৃত্বে আগামী সরকার গঠন হবে। আগামী সংসদে ৪০০ আসনের মধ্যে ৩০০ আসন পাবে এনসিপি।’

রোববার (২২ জুন) বিকেলে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এসে দলটির নিবন্ধনের প্রাথমিক আবেদন জমা দিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।

আত্মপ্রকাশের প্রায় চার মাস পর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের নির্বাচন কমিশনে আবেদন করল এনসিপি। এর আগে, গত শুক্রবার দলীয় সাধারণ সভায় এনসিপির খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদন হয়।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, সংস্কার কমিশন যে ৪০০ আসন করার প্রস্তাব করেছে, তার মধ্যে ৩০০ আসন এনসিপির ঘরে থাকবে। সব চ্যালেঞ্জ মাড়িয়ে এগিয়ে যাবে দল। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে এসেছি। শাপলা প্রতীকের জয়জয়কার হবে। জনগণ শাপলা প্রতীকে পাবে। আমরা সরকার গঠন করে ফ্যাসিবাদ সমাপ্ত করব।

এনসিপি ইসি পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে। ইসি পুনর্গঠন না হলে এই কমিশনের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে পাটওয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠানের সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশের মানুষ চায় পুনর্গঠন। পুনর্গঠন না হওয়ার কোনো উপায় নেই। যেহেতু এটা জনগণের দাবি, ইসি পুনর্গঠন হতেই হবে। পুনর্গঠন হবে। আমরা বিকল্প বি অপশনে যাচ্ছি না।’

এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘ইসি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু গত ১৫ বছরের এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। ইসির যেমন পুনর্গঠন করতে হবে, তেমনি নিয়মনীতিরও পরিবর্তন করতে হবে। এই কমিশনকে আমরা পুনর্গঠন করতে চাই, শক্তিশালী করতে চাই। আমরা এখনো বলছি, ইসি পুনর্গঠন প্রয়োজন।’

পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা সারাদেশে কথা বলেছি। অনেক জায়গায় অফিস নিতে গিয়েছি, বাধা দেওয়া হয়েছে। কমিটি গঠন করতে গিয়েছি, ছলচাতুরির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এই হলো দেশের রাজনৈতিক কালচার। সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেল করে আজ এই অবস্থায় এসেছি। ৫ তারিখের অভ্যুত্থানে যেভাবে মানুষের জয় হয়েছিল, সেভাবে আগামী নির্বাচনে ভোটব্যাংকে এনসিপির শাপলা প্রতীকে পুরো দেশের মানুষ জয়জয়কার করে দেবে। এনসিপির নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠন হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা ‍দ্বিতীয় প্রতীক হিসেবে রেখেছি কলম, তৃতীয় প্রতীক হিসেবে রেখেছি মোবাইল। তবে আমরা প্রত্যাশা করব আমাদের যাতে শাপলাই দেওয়া হয়। আমরা পাঁচ লাখ মানুষের ডাটা এনেছি। অধিকাংশ মানুষ এনসিপিকে চায় শাপলা প্রতীকে।’

পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা ১০০ উপজেলা, ২৫টি জেলা কমিটির শর্ত পূরণ করেছি। ট্রাকে করে আমরা ডকুমেন্ট আনছি। দিনরাত পরিশ্রম করে সকল শর্ত পূরণ করেছি। আশা করি অতিদ্রুত নিবন্ধন পাবো এবং আগামী সরকার গঠন করতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ।’

এ সময় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সব শর্ত পূরণ করে আবেদন দাখিল করেছি। জনগণের দল হিসেবে এনসিপি, অভ্যুত্থানকে ধারণ করে নতুন রাজনীতির চর্চা করতে চায়। এনসিপি দলের প্রতীক চেয়েছে কলম, মোবাইল ও শাপলা। তবে ইসি এনসিপিকে শাপলা বরাদ্দ দেবে বলে প্রত্যাশা এনসিপির।’

আবেদন জমা দেওয়ার আগে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে প্রায় সব শর্তই পূরণ করেছে এনসিপি। আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গোছানোর কাজও শেষ।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেতে যে শর্ত পূরণ করতে তার জন্য যত কাগজপত্র প্রয়োজন তা ট্রাকে করে নিয়ে আসা হচ্ছে। এখন আমাদের একটি প্রতিনিধি দল ভেতরে গিয়ে আবেদনের মূল কাগজপত্র জমা দেব।’

এসময় সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনসহ দলটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।