এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় বাংলাদেশের

প্রকাশ : 2022-02-25 19:28:31১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় বাংলাদেশের

লক্ষ্যটা বেশ কঠিন। জিততে হলে আফগানিস্তানকে করতে হতো ৩০৭ রান। কঠিন লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই জোড়া উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খায় আফগানরা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে লড়াই জমিয়ে তোলে অতিথিরা। শেষ পর্যন্ত ফল নিজেদের পক্ষে আনতে পারেনি তারা। আফগানিস্তানের প্রতিরোধ ভেঙে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।

আজ শুক্রবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানিস্তানকে ৮৮ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল তামিম ইকবালের দল।

বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দলীয় ১৬ রানের মাথায় দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে আফগানিস্তান। সেই ধাক্কা কাটিয়ে না উঠতেই দলীয় ৩৬ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় তারা। দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে একটি দারুণ জুটি পায় সফরকারীরা। রহমত শাহ ও নাজিবুল্লাহ জাদরান মিলেন গড়েন ৮৯ রানের জুটি।

এই জুটিতে মূলত লড়াই জমিয়ে তোলে আফগানিস্তান। বোলিংয়ে এসে রহমতকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ। ৫২ রান করে রহমত ফিরলে স্বস্তি ফেরে বাংলাদেশের। এরপর থিতু হয়ে যাওয়া আরেক ব্যাটার নাজিবুল্লাহকেও আউট করেন তাসকিন।

তাসকিনে বলে ৫৪ রানে থামেন নাজিবুল্লাহ। এই দুজন বিদায় নিলে আফগানদের সমীকরণ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। মাঝে রহমতউল্লাহকে সাকিব আউট করলে বিপদে পড়ে যায় তারা। এই বিপদ কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত ফল আর নিজেদের পক্ষে নিতে পারেনি আফগানিস্তান। থেমে যায় ২১৮ রানে। ৪০ বলে ৩২ রান করেন নবি। আর রশিদ খান করেন ২৯ রান।

এর আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩০৬ রান গড়ে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা লিটন ১২৬ বলে খেলেছেন ১৩৬ রানের ইনিংস।

চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সাবধানী শুরু করে বাংলাদেশ। যদিও শুরুর দিকে আউট হতে পারতেন লিটন। ফারুকির বল মোকাবিলা করতে গিয়ে অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি। লিটনকে ফেরানোর লক্ষ্যে রিভিউ নেয় আফগানরা। তাতে অবশ্য লাভ হয়নি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল পিচ করে লেগ স্টাম্পের বাইরে। তাই আফগানদের রিভিউ নষ্ট হয়।

তবে লিটন বাঁচলেও তামিম রক্ষা পাননি। সপ্তম ওভারে তাঁকে বিদায় করেছেন ফারুকি। বাংলাদেশ অধিনায়ককে এলবির ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন ফারুকি। দুই বাউন্ডারিতে ২৪ বলে ১২ রান করেন বাঁহাতি এই ওপেনার।

তামিম ফিরলে কিছুক্ষণ সাকিবকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন লিটন। কিন্তু বল হাতে নিজের প্রথম ওভারে সাকিবকে শিকার বানান রশিদ খান। ২০ রান করে ড্রেসিং রুমে ফেরেন সাকিব। ৫৪ বলে ভাঙে ৪৫ রানের জুটি।

তামিম-মুশফিকের বিদায়ের পর তৃতীয় উইকেটে চমৎকার জুটি পায় বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া লিটন-মুশফিক আজ খেলেন নির্ভার হয়ে। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৬৫ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন লিটন। ওয়ানডেতে এটি তাঁর চতুর্থ ফিফটি। লিটনের কিছুক্ষণ পর হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ৫০ ছুঁয়েছেন ৫৬ বলে।

এই জুটিতে বড় সংগ্রহের নাগাল পেয়ে যায় বাংলাদেশ। দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ার পথে ১০৭ বলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন দাস। ৪১তম ওভারে  রশিদ খানকে চমৎকার ইনসাইড আউটে কাভারের ওপর দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে আদায় করে নেন সেঞ্চুরি। শতক স্পর্শ করতে লিটন খেলেন ১৪টি বাউন্ডারি।

সেঞ্চুরির পর বোলারদের ওপর আরো চড়াও হন লিটন। সঙ্গে মেরে খেলেন মুশফিকুর রহিমও। কিন্তু দুজনে মিলে ইনিংস শেষ করতে পারলেন না। ১৩৬ রানে গিয়ে থামেন লিটন। আর সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফেরা মুশফিক করেন ৮৬ রান। ২০২ রানের এই জুটি ভাঙলে শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহ-আফিফের ব্যাটে ৩০৬ রানে থামে বাংলাদেশ। শেষ দিকে আশানুরূপ রান তুলতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ-আফিফ। ৬ বলে ৯ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। আর আফিফ করেন ১২ বলে ১৩ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ৩০৬/৪ (তামিম ১২, সাকিব ২০, লিটন ১৩৬, মুশফিক ৮৬, মাহমুদউল্লাহ ৬, আফিফ ১৩; মুজিব ১০-০-৪৯-০, রশিদ ১০-০-৫৪-১, ফারুকি ১০-১-৫৯-১, নবী ৪-০-২৬-০, ফরিদ ৮-০-৫৬-২, রহমত ১-০-১০-০)।

আফগানিস্তান : ৪৫.১ ওভারে ২১৮ (রহমত ৫২, রিয়াজ ১, হাশমতউল্লাহ ৫, আজমতউল্লাহ ৯, নাজিবুল্লাহ ৫৪, গুরবাজ ৭, নবী ৩২ , রশিদ ২৯, মুজিব ৮, ফারুকি ০, ফরিদ ৬; তাসকিন ১০-২-৩০-২, মুস্তাফিজ ৮-০-৫৩-১, মিরাজ ১০-০-৫২-১, শরিফুল ৭-০-৪৪-১, সাকিব ৯-০-২৯-২, মাহমুদউল্লাহ ১-০-২-১)।

ফল : ৮৮ রানে জয়ী বাংলাদেশ।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ : লিটন দাস।