ই-কমার্স বন্ধ না করে শৃঙ্খলায় ফেরানোর তাগিদ চার মন্ত্রীর

প্রকাশ : 2021-09-22 21:14:42১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

ই-কমার্স বন্ধ না করে শৃঙ্খলায় ফেরানোর তাগিদ চার মন্ত্রীর

দেশে ই-কমার্স বন্ধ না করে শৃঙ্খলায় ফেরানোর তাগিদ দিয়েছেন সরকারের চার মন্ত্রী। তারা হলেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ‘ডিজিটাল কমার্স ব্যবসায় সাম্প্রতিক সমস্যা’ বিষয়ে পর্যালোচনা সভায় মন্ত্রীরা এ মতামত দেন।

সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘ই-কমার্সে অনেক মানুষ প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ই-কমার্স পরিচালনার জন্য একটি আইন তৈরি করা প্রয়োজন। দেশের কোনো মানুষ যাতে ডিজিটাল বাণিজ্যে প্রতারিত না হন, সেজন্য পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। একজন্য একটি প্ল্যাটফর্ম গঠন করা দরকার।’

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ই-কমার্স জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মানুষ যাতে প্রতারিত না হন, সেজন্য আইন করা দরকার। এ ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটি রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করা যেতে পারে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গুটিকয়েক প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এ জন্য প্রচারমাধ্যম, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগাতে হবে। তাহলে প্রতারণার সুযোগ কমে আসবে। রেগুলেটরি অথরিটিকে অত্যাধুনিক করে গড়ে তুলতে হবে এবং মনিটরিং জোরদার করতে হবে।’

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। আইনের আওতায় এনে ই-কমার্সকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। যাতে কেউ প্রতারণা করতে না পারে। মানুষ কম দামে পণ্য পেতে চাইবে, এটাই বাস্তবতা। ই-কমার্সের জন্য জামানত রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ব্যবসা যতো বড় হবে, জামানত ততো বেশি হবে। মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে। প্রতারণার বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। মানুষ যাতে টাকা ফেরত পায়, সেজন্য সহযোগিতা করা প্রয়োজন।’

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘ই-কমার্স বন্ধ না করে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য একটি রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করা হবে। সারা বিশ্বে ই-কমার্স চালু রয়েছে। ইতোমধ্যে এ ব্যবসার সঙ্গে লাখ লাখ মানুষ জড়িত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাণিজ্য পরিচালিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করা হবে। এখান থেকে ই-কমার্সের জন্য রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে এবং কঠোরভাবে ডিজিটাল বাণিজ্য মনিটরিং করা হবে। করোনাকালে ই-কমার্স সুনাম অর্জন করেছে, মানুষ উপকৃত হয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অসৎ ব্যবসা ও প্রতারণার কারণে সব ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

টিপু মুনশি আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের প্রতারণার সুযোগ না পায়, সে জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ই-কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা কার্যকর হওয়ার পর প্রতারণা বন্ধ হয়েছে। এর আগে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের প্রতারিত করেছে, ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সে বিষয়ে আরও কী করা যায়, সরকার তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে।’

এসময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন মো. মফিজুল ইসলাম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, র‌্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রীনা পারভীন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. মেজবাউল হকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।