ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা 'দক্ষিণ আফ্রিকা নোবেল পুরস্কারের দাবিদার' -কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট
প্রকাশ : 2024-01-15 13:07:29১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
দক্ষিণ আফ্রিকার আইনি দল নোবেল পুরস্কারের দাবিদার বলে মন্তব্য করেছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো। ইসরায়েলের আগ্রাসন থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) দেশটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগ গত সাতই অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। তাই ইসরায়েলকে জবাবদিহি করতে দক্ষিণ আফ্রিকার আইনি দল আদালতেই লড়ছে। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় নিহত হয়েছেন প্রায় ২৪ হাজার ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ। এই পরিস্থিতিতে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
আল জাজিরা বলছে, কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো বারবার আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার চলমান মামলার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন। এর আগে গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধকে ‘গণহত্যা’ হিসাবেও চিহ্নিত করেন তিনি।
আইসিজেতে দক্ষিণ আফ্রিকা যে প্রমাণপত্র জমা দিয়েছে তাতে দাবি করা হয়েছে যে ইসরায়েলের যে কার্যক্রম তার সঙ্গে গণহত্যার বৈশিষ্ট্যের মিল আছে কারণ তারা ফিলিস্তিনিদের জাতীয়, জাতিগত এবং নৃগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য অংশকে ধ্বংস করতে চেয়েছে।ইসরায়েল গাজায় যা করেছে এবং যা করতে চেয়েছে- উভয় ক্ষেত্রেই এ বক্তব্য তুলে ধরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অর্থাৎ ইসরায়েল এখন যা করছে যেমন বিমান হামলা এবং যা করতে পারেনি তাহলো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।এই মামলায় গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ্যে ইসরায়েল যে দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছে সেটিকে তুলে ধরা হয়েছে ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ এর প্রমাণ হিসেবে।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো লিখেছেন, ‘আজকে যদি কেউ নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য হয়ে থাকে, তবে তারা হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার আইনি দল যারা ফিলিস্তিনি জনগণের সুরক্ষায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করেছে।’ এছাড়া আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, চিলি এবং পেরুর সরকারও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। আগ্রাসন শুরুর সপ্তাহখানেক পরই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুমকি দেয় কলম্বিয়া। সেসময় গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির প্রেসিডেন্ট।
কিন্তু ইসরায়েল অনেকটা ক্ষুব্ধ হয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। মি. নেতানিয়াহু বলেছেন : “নো, দক্ষিণ আফ্রিকা, গণহত্যার অপরাধ আমরা করিনি, এটি করেছে হামাস।”
এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সেসময় প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো বলেন, ‘যদি ইসরায়েলের সঙ্গে আমাদের বৈদেশিক সম্পর্ক স্থগিত করতে হয় তবে আমরা তা স্থগিত করব। তারপরও আমরা গণহত্যা সমর্থন করি না।’
মূলত চলমান সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বেশ কয়েকটি পোস্ট দিয়েছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট। এর মধ্যে একটি পোস্টে গাজায় ইসরায়েলের হামলাকে ইহুদিদের ওপর নাৎসি নিপীড়নের সঙ্গে তুলনা করেন প্রেসিডেন্ট পেট্রো।এমনকি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী গাজায় অবরোধ কার্যকরের ঘোষণা দেওয়ার পর পেট্রো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, ‘নাৎসিরাও ইহুদিদের সম্পর্কে এমনটাই বলেছিল।
সাই