ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ার, 'ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিলে নরক নেমে আসবে'

প্রকাশ : 2025-06-20 11:09:13১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ার, 'ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিলে নরক নেমে আসবে'

ইরানে হামলায় ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিলে তা সমগ্র অঞ্চলে নরক নেমে আসবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খতিবজাদে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই যুদ্ধে নিজেকে জড়িয়ে ফেললে তা হবে পঙ্কিলময়। এতে গোটা অঞ্চলই নরকে পরিণত হবে। বৃহস্পতিবার বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।

সাঈদ খতিবজাদে বলেছেন, ‘এটা আমেরিকার যুদ্ধ নয়। যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প এই যুদ্ধে জড়ান তাহলে ইতিহাস তাকে মনে রাখবে এমন একজন প্রেসিডেন্ট হিসাবে যিনি একটি যুদ্ধে নাম লিখিয়েছেন, যা তার যুদ্ধ ছিল না।’

ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা এই সংঘাতকে একটি জটিল ফাঁদে পরিণত করবে। এতে আগ্রাসন চলতে থাকবে। নৃশংস নির্যাতনের অবসান আরও বিলম্বিত হবে।

সাক্ষাৎকারে খতিবজাদেহ বলেন, ইরান কূটনীতি চায়। কিন্তু তার দেশের বিরুদ্ধে বোমাবর্ষণ অব্যাহত থাকলে কেউ আলোচনায় যেতে পারবে না। যে মুহূর্তে এই আগ্রাসন বন্ধ হবে, অবশ্যই কূটনীতিই হবে প্রথম বিকল্প। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরান পারমাণবিক চুক্তির দ্বারপ্রান্তে ছিল। কিন্তু সেই চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আগেই নাশকতা চালিয়ে সুযাগ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল রোববার। কিন্তু শুক্রবার রাতে ইসরায়েল ইরানে হামলা চালায়। এরপরই ইরান জানায়, ইসরায়েলের হামলার পর এই আলোচনার আর কোনও অর্থ হয় না।

এদিকে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক হামলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জন্য আরও দুই সপ্তাহ সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সিএনএনের খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন ল্যাভিট এ বিষয়ে ব্রিফিং করেন।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি বলেন, ইরানের সঙ্গে যেকোনো চুক্তির ক্ষেত্রে ‘ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ না করার বিষয়টি’ অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগের অবস্থান পুনরায় তুলে ধরে বলেন, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের সুযোগ দেওয়া যাবে না।

এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৩ জুন ইরানে ইসরায়েলের অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত রাজধানী তেহরান ও অন্যান্য শহরে নিহত হয়েছেন মোট ৫৮৫ জন। এই নিহতদের মধ্যে ১২৬ জনকে সামরিক এবং ২৩৯ জনকে বেসামরিক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।

ইসরায়েলের হামলা শুরুর পরের দিন ১৪ জুন নিহত ও আহতদের একটি পরিসংখ্যান জানিয়েছিল ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়েছিল, তেহরান ও আক্রান্ত অন্যান্য শহরে ২২৪ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ হাজার ২৭৭ জন।

যদিও ইরান সংঘাতের ঘটনায় নিয়মিত মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করেনি। সোমবার প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদে মৃতের সংখ্যা ২২৪ জন এবং আহতের সংখ্যা ১২৭৭ জন বলে জানানো হয়েছে।