ইতালিকে গুঁড়িয়ে অবশেষে চেনা পথে জার্মানি
প্রকাশ : 2022-06-15 10:10:34১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
পথ ভুলে যাওয়া দলের কাছে একটা জয় খুব করে চাইছিলেন হান্স ফ্লিক। তবে প্রতিপক্ষের গোলমুখে বারবার ধুঁকতে থাকা দল তার চাওয়া যে এমন দাপুটে পারফরম্যান্সে পূরণ করবে, তা বুঝি ভাবতেও পারেননি জার্মানি কোচ। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইতালির রক্ষণে চাপ ধরে রেখে একের পর এক গোল উদযাপন করলেন মুলার-ভেরনাররা। বর্তমান ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের নাস্তানাবুদ করে বিশ্বকাপের বছরে নতুনভাবে জেগে উঠল ফ্লিকের দল।
মনশেনগ্লাডবাখের বরুশিয়া-পার্কে মঙ্গলবার রাতে নেশন্স লিগের ম্যাচটি ৫-২ গোলে জিতেছে জার্মানি। জসুয়া কিমিখ দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান বাড়ান ইলকাই গিনদোয়ান। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তৃতীয় গোলটি করেন টমাস মুলার। আর বিজয়ীদের শেষ দুটি গোল টিমো ভেরনারের।
একপেশে প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে ইতালিও আক্রমণ করেছে অনেক। শেষ বেলায় গিয়ে তারা দুটি গোলের দেখা পেলেও ম্যাচের ফল নিয়ে অনিশ্চয়তা শেষ হয়ে গিয়েছিল আগেই। তাদের দুই গোলদাতা ভিলফ্রিদ ইয়োন্তো ও আলেস্সান্দ্রো বাস্তোনি।
আসরের প্রথম তিনটিসহ টানা চার ম্যাচে জয়ের দেখা না পাওয়া জার্মানি এদিন শুরু থেকেই খেলতে থাকে আক্রমণাত্মক ফুটবল। সাফল্যও পেয়ে যায় দ্রুত।
অষ্টম মিনিটে ডাবল সেভে দলকে বাঁচানো জানলুইজি দোন্নারুম্মা দুই মিনিট পর আরে পারেননি। বাঁ দিক থেকে ডাভিড গাউমের পেনাল্টি স্পটের কাছে বাড়ানো ক্রস ডান পায়ের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাঁ পায়ের প্লেসিং শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন কিমিখ।
এগিয়ে গিয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা জার্মানি অধিকাংশ সময় বল দখলে রেখে খেলতে থাকে। প্রথমার্ধের শেষ দিকে কয়েক মিনিটে কয়েকটি সুযোগও পায় তারা।
অবশেষে বিরতির ঠিক আগে ইলকাই গিনদোয়ানের সফল স্পট কিকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় স্বাগতিকরা। ইতালির ডি-বক্সে ইয়োনাস হফমান পেছন থেকে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় জার্মানি।
দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে আরেক গোল খেয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে ইতালি। বাঁ থেকে গাউম দূরের পোস্টে হাফমানের উদ্দেশ্যে ক্রস বাড়ান, ক্লিয়ার করার চেষ্টায় শট নেন লিওনার্দো স্পিনাস্সোলা। কিন্তু বল চলে যায় ফাঁকায় দাঁড়ানো মুলারের পায়ে। জোরাল শটে ঠিকানা খুঁজে নেন বায়ার্ন মিউনিখ ফরোয়ার্ড।
খানিক বাদে পরপর দুই মিনিটে ভেরনার আরও দুই গোল করলে বিশাল জয়ের দিকে ছুটতে থাকে জার্মানি। ৬৮তম মিনিটে মুলার বাঁ দিকে পাস দেন সের্গে জিনাব্রিকে আর তিনি ছোট করে বাড়ান ছয় গজ বক্সে মুখে। দারুণ স্লাইডে বাকি কাজ সারেন চেলসি ফরোয়ার্ড।
পরের মিনিটের গোলটিতেও দারুণ অবদান জিনাব্রির। তার ফিরতি পাস পেয়েই দোন্নারুম্নাকে পরাস্ত করেন ভেরনার।
৭৮তম মিনিটে ব্যবধান কমায় ইতালি। সতীর্থের পাস ঝাঁপিয়ে পড়া মানুয়েল নয়ারকে ফাঁকি দিয়ে চলে যায় দূরের পোস্টে ইয়োন্তোর পায়ে। টোকা দিয়ে বল জালে পাঠান ১৮ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। আর যোগ করা সময়ের শেষ দিকে দ্বিতীয় গোলটি করেন ইন্টার মিলান ডিফেন্ডার বাস্তোনি।
দারুণ এই জয়ে প্রথমবারের মতো নেশন্স লিগের ফাইনালসে ওঠার সম্ভাবনাও ভালোমতো টিকে রইলো জার্মানির। চার ম্যাচে এক জয় ও তিন ড্রয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠেছে তারা। ১ পয়েন্ট কম নিয়ে তিন নম্বরে ইতালি।
জার্মানির জন্য সবচেয়ে বড় স্বস্তির ও আনন্দের বিষয় হলো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলের এভাবে স্বরূপে ফেরা। আর মাত্র পাঁচ মাস বাদেই যে মাঠে গড়াবে বিশ্বকাপ। ফ্লিকের কোচিংয়ে দল কোনো ম্যাচ না হারলেও ঠিক চেনা ছন্দে দেখা যাচ্ছিল না তাদের।
ফ্লিকের হাত ধরে প্রথম আট ম্যাচের সবকটি জয়ের রেকর্ড গড়ার পর ড্র করেছিল পরের চার ম্যাচে। এই জয়ে অপরাজেয় যাত্রাও অব্যাহত রইলো তাদের।
দিনের আরেক ম্যাচে সবচেয়ে বড় চমকের জন্ম দিয়েছে হাঙ্গেরি। ইংল্যান্ডকে তাদেরই মাঠে উড়িয়ে দিয়েছে ৪-০ গোলে। ৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠেছে বিস্ময় জাগানো দলটি। ২ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে ইংল্যান্ড।