ইউক্রেইনে রাশিয়ার আক্রমণ বিবেকের প্রতি অপমান- জাতিসংঘ মহাসচিব
প্রকাশ : 2023-02-23 13:41:15১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
ইউক্রেইনে রাশিয়ার আক্রমণ বিশ্বের সম্মিলিত বিবেকের প্রতি ‘অপমান’ বলে মন্তব্য করে এর নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
ইউক্রেইন যুদ্ধের বর্ষপূর্তির দুই দিন আগে বুধবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক বৈঠকে তিনি ওই মন্তব্য করেন।
রাশিয়া অবিলম্বে বিনাশর্তে প্রতিবেশী দেশটি ছেড়ে যাবে, ইউক্রেইন ও তার মিত্রদের এমন দাবি নিয়ে তোলা প্রস্তাবের বিষয়ে বৈঠকটিতে বিতর্ক হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এ প্রস্তাবে সমর্থন দেওয়ার মাধ্যমে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো তাদের প্রতি সংহতি জানাবে বলে আশা করছে ইউক্রেইন। ইতোমধ্যে ৬০টি দেশ প্রস্তাবটিতে সমর্থন জানিয়েছে।
অপরদিকে ক্রেমলিন অভিযোগ করেছে, পশ্চিমারা যে কোনো মূল্যে রাশিয়াকে পরাজিত করতে চাইছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নিবিয়েনজিয়া বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা পুরো বিশ্বকে যুদ্ধে ডুবিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে প্রায় ২ লাখের মতো সেনা পাঠিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় আক্রমণের সূচনা করেন।
তখন থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে এ পর্যন্ত অন্তত ৭১৯৯ জন বেসামরিক নিহত ও আরও হাজার হাজার আহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘের অনুমিত হিসাব থেকে জানা গেছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, এই যুদ্ধে রাশিয়া ও ইউক্রেইন প্রত্যেকেরই অন্তত ১ লাখ সেনা হতাহত হয়েছে।
যুদ্ধের কারণে ১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে, তারা ইউক্রেইনের ভেতরে অথবা অন্য দেশগুলোতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়ে আছে।
প্রেসিডেন্ট পুতিন দাবি করেছেন, ইউক্রেইনকে ‘নব্য-নাৎসীমুক্ত’ ও ‘নিরস্ত্রীকরণ’ এর প্রয়োজনেই এই অভিযান চালানো দরকার ছিল।
ইতিহাসগতভাবে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা ইউক্রেইন ও এর মিত্ররা পুতিনের ওই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বিনা উস্কানিতে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে।
“এই আক্রমণ আমাদের সম্মিলিত বিবেকের প্রতি অপমান। এটি জাতিসংঘের সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন,” সাধারণ পরিষদের বৈঠকে বলেছেন গুতেরেস।
‘বাড়তে থাকা এক সংঘাতের’ সম্ভাব্য ফলাফল ‘পরিষ্কার এবং উপস্থিত বিপদ’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গুতেরেস বলেন, “এই যুদ্ধ আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতাকে উস্কে দিচ্ছে এবং বিশ্বব্যপী উত্তেজনা ও বিভক্তিতে ইন্ধন দিচ্ছে। পাশাপাশি এটি অন্যান্য সঙ্কট থেকে মনোযোগ ও সম্পদ সরিয়ে নিয়ে বৈশ্বিক ইস্যুগুলোকে চাপা দিচ্ছে।”
তিনি উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, এই যুদ্ধের কারণে ‘পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরোক্ষ হুমকি’ দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, “(শেষ) প্রান্ত থেকে পিছিয়ে যাওয়ার এটাই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।
“আত্মতুষ্টি কেবল সঙ্কটকেই আরও গভীর করে তুলবে, তাতে সনদে ঘোষিত আমাদের নীতিগুলো আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়। যুদ্ধই সমস্যা।
“ইউক্রেইনের জনগণ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ইউক্রেইনীয়, রুশ ও সেখান থেকে দূরে থাকা মানুষেরও শান্তি প্রয়োজন।”