আহসান উল্লাহ মাস্টারের সমাধিতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে শ্রদ্ধা
প্রকাশ : 2022-05-08 10:44:13১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
আওয়ামীলীগ ও শ্রমজীবি মানুষের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টারের ১৮তম শাহাদাৎবার্ষিকীতে তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের জ্যেষ্ঠ পুত্র যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন। এসময় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে পু®পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। শনিবার (৭ মে) সকালে গাজীপুর মহানগরের ৩৯নং ওয়ার্ডের হায়দরাবাদ গ্রামে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত এ বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান তারা।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজহাররুল ইসলাম খান। এ সময়ে অধিদপ্তরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এ কে এম শামীমুল হক সিদ্দিকী। বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ফাউন্ডেশনের সচিব কৃষ্ণন্দু সাহা। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, বিকেএসপি ও ক্রীড়া পরিদপ্তরসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহের পক্ষ হতেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এ সময়ে মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা সাবেক প্রতিমন্ত্রি মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি, সংরক্ষিত আসনের শামসুন্নাহার ভুঁইয়া এমপি, অধ্যাপকিা রুমানা আলী টুসি এমপি, গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জামিল হাসান দুর্জয়, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শামসুল আলম প্রধান, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, এ ছাড়াও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তরের পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
জনপ্রিয় নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার ২০০৪ সালের ৭ মে টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ চলাকালে সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হন । ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল দ্রæত বিচার আইনে আহসান উল্লাহ মাষ্টার এমপি হত্যা মামলার রায় দেয়া হয়। ওই রায়ে ৩০ জন আসামির মধ্যে প্রধান আসামি বিএনপি নেতা নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনকে ফাঁসি ও ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ২জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের ৯ নভেম্বর তিনি গাজীপুরের হায়দরাবাদ গ্রামে এক সমভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ছাত্র জীবন থেকে তিনি অসা¤প্রদায়িক চেতনার সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন। ৬২’র শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন ও ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের পাশাপাশি সক্রিয় কর্মী হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে তিনি আজীবন কাজ করেছেন। শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি সমাজের অসহায় মানুষের সহায়তায় তিনি সর্বদা ছিলেন নিবেদিত। সকল শ্রেণী পেশার মানুষের কল্যাণে তিনি কাজ করেছেন। তিনি স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় নির্বাচনে যতবার প্রার্থী হয়েছেন জনগণের বিপুল ভোটে ততবারই তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় তিনি ছিলেন আপোষহীন।
আহসান উল্লাহ মাষ্টার গাজীপুর-২ (গাজীপুর সদর-টঙ্গী) আসন হতে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে দু’বার সংসদ সদস্য, ১৯৯০ সালে গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ সালে দু’দফা পূবাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯২ সালে উপজেলা পরিষদ বিলোপের পর চেয়ারম্যান সমিতির আহবায়ক হিসেবে উপজেলা পরিষদের পক্ষে মামলা করেন ও দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলেন। এক পর্যাযে তিনি গ্রেফতার হন এবং কারাভোগ করেন। আহসান উল্লাহ মাষ্টার শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ও সাধারণ সস্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তিনি আওয়ামীলীগের জাতীয় কমিটির সদস্য, শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি বহুবিধ গুণাবলীর অধিকারী ছিলেন, তিনি ছিলেন আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক, নির্বিরোধ, সহজ- সরল ও মিশুক একজন মানুষ।