আবারও দুজনে হাসিমুখে প্রকাশ্যে ধরা দিলেন তাহসান-মিথিলা

প্রকাশ : 2021-05-16 14:03:10১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

আবারও দুজনে হাসিমুখে প্রকাশ্যে ধরা দিলেন তাহসান-মিথিলা

দেশের বিনোদন জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং আলোচিত তারকা জুটি সম্ভবত তাহসান-মিথিলা। বিষাদের সুর ছড়িয়ে প্রায় পাঁচ বছর আগে তাদের বিচ্ছেদ হওয়ার পর এই প্রথম আবারও দুজনে হাসিমুখে প্রকাশ্যে ধরা দিলেন।

শনিবার (১৫ মে) নিজেদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে তাহসান ও মিথিলার লাইভে আসার বিষয়টি জানায় ইভ্যালি।  

এর আগে বুধবার (১২ মে) রাতে একটি ‘সারপ্রাইজ’ দেওয়ার ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হৈচৈ ফেলে দেন তাহসান। এর কিছু সময় পরেই ‘সারপ্রাইজ এর অপেক্ষায়’ রয়েছেন জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন মিথিলা। কী হতে যাচ্ছে, এমনই যখন কানাঘুষা চলছি নেটিজেনদের মাঝে। তখনই বৃহস্পতিবার (১৩ মে) ‘আমরা সারপ্রাইজ ভালবাসি’ বলে আরেকটি পোস্ট দেওয়া হয় ইভ্যালির পক্ষ থেকে। এরপর শনিবার রাতেই প্রতীক্ষিত মুহূর্ত ধরা দেয়।  

‘ইভ্যালি ঈদ লাইভ: স্যাটারডে নাইট সারপ্রাইজ’ শিরোনামে লাইভ অনুষ্ঠানটিতে ভক্তদের সামনে উপস্থিত ইভ্যালির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর তাহসান ও মিথিলা। জনপ্রিয় উপস্থাপক ও স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান নাভিদ মাহবুব এ লাইভ অধিবেশনটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে তিনটি পর্বে কুইজে অংশ নেন তাহসান ও মিথিলা। খেলার পর্ব ছিল তিনটি। প্রথম পর্বে যে সকল দর্শক সবচেয়ে ভালো ও ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন তাদের জন্য সারপ্রাইজ গিফ্ট থাকছে তিনটি মোবাইল ফোন। দ্বিতীয় পর্বের সুন্দর মন্তব্যকারী দুইজন পাবেন দু’টি টেলিভিশন। তৃতীয় পর্বে সবচেয়ে সুন্দর মন্তব্যকারী পাবেন একটি সুজুকি মোটরসাইকেল।  

লাইভ অনুষ্ঠান ইভ্যালির ‘ফেস অব লাইফস্টাইল’ মিথিলা বলেন, আমরা শুধু ইভ্যালির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবেই এখানে আসিনি। আমরা ইতিবাচকতা ছড়াতে এসেছি। অনলাইনে আমরা ইতিবাচক কথা বলব। কারণ সবাই মিলেই তো আমাদের ভালো থাকতে হবে শারীরিক ও মানসিকভাবে। এমনিতেই একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমরা যেন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বের হই। মাস্ক পরি। যতটা সম্ভব কেনাকাটা অনলাইনে করি।  

তিনি বলেন, আমরা যেন খারাপটা না বলি এবং খারাপটা না শুনি। চলুন আমরা ইতিবাচকতা ছড়িয়ে দিই। এটাই আমাদের ইভ্যালির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার এবং আজকের লাইভে আসার মূল লক্ষ্য। অন্তত আমার তরফ থেকে তাই।  

ইভ্যালির চিফ গুডনেস অফিসার হিসেবে দায়িত্বে আছেন তাহসান। মিথিলার কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে তিনি বলেন, আমি ভাগ্যবান যে আমার পোস্টে ভালো ভালো কমেন্ট করেন ভক্তরা। কিন্তু কিছু মানুষ আছেন যারা প্রতিনিয়ত নেতিবাচকতা ছড়াতে ভালোবাসেন। পাঁচ বছর হয়ে গেল আমাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। আমরা কাজ করছি না একসঙ্গে হয়ত সঙ্গত কারণে। কিন্তু এখনও প্রতিনিয়ত আমার পোস্টে তাকে নিয়ে বুলি করা হয়। আবার তার পোস্টে আমাকে নিয়ে হয়ত ট্যাগ করা হয়। এই যে এই কাজগুলো কারা করেন এবং কেন করেন এ নিয়ে আমরা আসলে কথা বলি না বলে এগুলো বেড়ে যাচ্ছে। এবং বেড়ে এমন একটা পর্যায়ে চলে যাচ্ছে, যেখানে আমরা গত সপ্তাহে দেখলাম, চঞ্চল চৌধুরী একজন গুণী শিল্পী তার মাকে নিয়ে একটা ছবি দিয়েছেন সেখানেও কীরকম নেতিবাচকতার ছড়াছড়ি।  

তিনি বলেন, এটা শুধু আমার, মিথিলার বা চঞ্চল চৌধুরীর বেলায় না, যেকোন ব্র্যান্ড বা সম্মানিত মানুষের পেজেও কিছু মানুষ যে কটু কথা বলছেন এর মূল কারণ হচ্ছে, আমরা নিজেদের হীনমন্যতা অন্যদের দিকে প্রক্ষেপণ করতে চাই। এটা একটা মানসিক ব্যাধিতে রূপান্তরিত হয়েছে। আমরা যারা পাবলিক ফিগার আমরা যদি কথা না বলি তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম বুঝবে না যে কাউকে কটু কথা বলা, গালিগালাজ করা - এর মাঝে কোনও বীরত্ব নেই। এটা আমারই যে অসভ্যতা সেটা প্রকাশ পায়। এবং আমারই পারিবারিক শিক্ষা যে কতটা কদর্য সেটা প্রকাশ পায়।  

তাহসান বলেন, এ ব্যাপারটা নিয়ে আমাদেরকেই কথা বলতে হবে। আমার মনে হয়েছে, আজকে এ সুযোগটা আছে। কারণ আমাদেরকে যেহেতু মানুষ একসঙ্গে প্রত্যাশা করবে না, আমরা একসাথে হয়ে আজ লাইভে এসেছি বলেই কিন্তু অনেক মানুষ এ লাইভটা দেখবে। এখানে আমরা সারপ্রাইজ গিফ্ট তো দিচ্ছি। আরেকটা সারপ্রাইজ হলো, আমরা দুজনে হয়ত আলাদা হয়ে গেছি, কিন্তু আমরা সসম্মানে একে অপরের পাশাপাশি বসে কথা বলতে পারি। একে অপরকে কটুবাক্য না বলে, অপমান না করে, শ্রদ্ধার সাথে কথা বলতে পারি। এখান থেকেই যেন পরবর্তী প্রজন্ম শিখতে পারে, কারও সাথে তোমার না মিললেও, তোমার মতাদর্শে পার্থক্য থাকলেও, তুমি তার সঙ্গে বসে সম্মানের সাথে কথা বলতে পার। এজন্য তাকে কোনও কদর্য কথা বলতে হবে না। এ কথাটাই আসলে আমি আমার ভক্তদের বলতে চাই।  

তাহসানের ফ্যান পেজে অনুসারী সংখ্যা ৮৮ লাখ। তার বেশির ভাগ ভক্তরাই সুস্থ মন-মানসিকতার হলেও বৃহৎ ফ্যান পেজে কিছু নেতিবাচক মানুষও আছেন। এমনটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৃথিবীতে নেতিবাচকতার ছড়াছড়ি আছে। কিন্তু ইতিবাচক অনুভূতির চর্চা করতে হবে। আমরা চাইলেই ইতিবাচকতা ছড়িয়ে দিতে পারি।