আদমদীঘিতে স্ত্রী’কে অমানুষিক নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করল পাষন্ড স্বামী
প্রকাশ : 2022-04-09 19:06:57১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বগুড়ার আদমদীঘিতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রীকে দিয়ে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দায়ের করানোর পর বিষয়টি ফাঁস করে দেয়ায় স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন করে তাঁর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে পাষন্ড স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দুপুরে উপজেলার কোমারপুর গ্রামের শিয়ালগাড়ি মহল্লায়।এ ঘটনায় গৃহবধূ শ্যামলী বেগম (৩০) বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাঁর স্বামী রফিকুল ইসলাম (৪৪) কে গ্রেফতার করেছে। রফিকুল ইসলাম উপজেলার ছাতিয়নগ্রাম ইউনিয়নের কোমারপুর গ্রামের শিয়ালগাড়ি পাড়ার মৃত ইবারত আলীর ছেলে।
মামলার এজাহার ও গ্রামবাসি সূত্র জানা গেছে, শ্যামলী বেগমের সাথে প্রায় দেড় বছর আগে রফিকুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ওই গৃহবধূ জানতে পারেন তার স্বামী একজন বদমেজাজী, স্ত্রী নির্যাতনকারি ও বিকৃত মানসিকতার মানুষ। এর আগে সে ১০টি বিয়ে করেছেন। শ্যামলীর দাবী তিনি রফিকুলের ১১ নম্বর স্ত্রী। বিয়ের বিষয় সহ নানা বিষয় জানার পর এবং নির্মম নির্যাতন সহ্য করে স্বামীর সংসার করে আসছেন শ্যামলী । শনিবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শয্যায় কথা হয় শ্যামলী বেগমের সাথে। শ্যামলী এ প্রতিনিধিকে জানান, জমির চাষের টাকা নিয়ে প্রতিবেশী দুলু ফকির ও হান্নান ফকিরের সাথে তাঁর স্বামীর বিবাদ চলছিল। এ দু’জনকে ফাঁসানোর জন্য স্বামী আমাকে দিয়ে দুই ভাই দুলু ফকির ও হান্নান ফকিরের বিরুদ্ধে গত ৬ এপ্রিল থানায় মিথ্যা ধর্ষন মামলা দায়ের করান। মামলা দায়েরের পর গত বুধবার রাতে পুলিশ দুই সহোদরকে গ্রেপ্তার করে বগুড়া জেল হাজতে পাঠায়। মিথ্যা ধর্ষন মামলা দায়েরের বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হলে রফিকুল তাঁর স্ত্রীকে সন্দেহ করে। এ ঘটনায় সে স্ত্রীকে দোষী করে শুক্রবার দুপুরে শ্যামলীকে বেধড়ক মারপিট করে এবং এক পর্যায়ে মাথার চুল কেটে দিয়ে তাঁকে ন্যাড়া করে দেয়।
পরে গ্রামের লোকজন বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্যামলী বেগমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং তাঁর স্বামী রফিকুলকে আটক করে। পরে শ্যামলীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে শ্যামলী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আদমদীঘি থানার ওসি জালাল উদ্দীন জানান, এ ঘটনায় গৃহবধূ বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। স্বামী রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে বগুড়া জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।বিষয়টি আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক এএসএম হাবিবুর রহমান মুঠোফোনে জানান, গৃহবধূর শরীরে মারপিটের চিহ্ন রয়েছে এবং বাম হাতে কামড়ের ক্ষত রয়েছে। তাঁর মাথার চুল কেটে দেয়া হয়েছে।