আদমদীঘিতে দীর্ঘ দুই বছর পর স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদের কেনাকাটা করতে পেরে ক্রেতা খুশি

প্রকাশ : 2022-04-17 19:24:37১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

আদমদীঘিতে দীর্ঘ দুই বছর পর স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদের কেনাকাটা করতে পেরে ক্রেতা খুশি

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলাতে দীর্ঘ দুই বছর পর ঈদের মার্কেট জমে উঠতে শুরু করেছে। ঈদ উপলক্ষে আদমদীঘি সদর ও সান্তাহারে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। নতুন পোশাক, প্রসাধনী ও গয়নার দোকানে ভিড় বেড়েছে ক্রেতাদের। তাদের পদচারণায় করোনার ধকল সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে বিপণি বিতানগুলো আলোক সজ্জায় করে সেজেছে ঈদের প্রস্তুতি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে গত দুই বছরে ঈদের মধ্যে দোকান খুলতে পারিনি আর তেমন ব্যবসা হয়নি। এখন তাঁরা ঈদকে নিয়ে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যে বৈশাখের কেনাকাটা শেষ করে এখন ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে। তবে দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির কারনে কেনাকাটায় ভাটা পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। 

গতকাল রোববার সকালে উপজেলার মোস্তফা মার্কেটে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতাদের আনাগোনা চোখে পড়ার মতো। এর মধ্যে নারী ও তরুণীদের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাকে সাজানো ছিল দোকানগুলোতে। ক্রেতাদের কেউ দেখছিল, কেউ দরদাম করছিলেন। মোস্তফা মার্কেটের রাকিব গার্মেন্টেসের দোকানের সামনে আরিফা ইসলাম নামের এক নারী বললেন, তাঁর ছোট ছোট দুটি বাচ্চারা ঈদ বুঝে গেছে। প্রতিবারই তাঁরা ঈদের জন্য নতুন পোশাক নেয়। তাদের জন্যই মূলত তিনি মার্কেটে এসেছেন। ঈদের কিছু কেনাকাটা আগেভাগেই সেরে নিতে চান তিনি। ঊর্ধ্বগতিতে ঈদের সুর্বনা আক্তার নামের আরেক নারী বললেন, দীর্ঘ দুই বছর পর স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পেরে খুশি। রোজার শেষের দিকে ঈদের বাজারে অনেক চাপ হয়। সে জন্য এখনই কেনাকাটা শেষ করতে চাচ্ছেন তিনি। তবে তাঁর কাছে দাম একটু বেশিই মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, দাম বেশি হোক আর যাই হোক, ঈদ এলে একটু কেনাকাটা করতেই হয়। সে জন্য মার্কেটে এসেছেন তিনি। 

সান্তাহার সোনার বাংলা মার্কেটের ব্যবসায়ী শাহিনা জোয়াদার বলেন, গত দুই বছর কোনো ব্যবসা হয়নি। এ বছরের ব্যবসা দিয়েই আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। তাই নতুন করে আবারও বাড়তি টাকা বিনিযোগ করেছি। তবে এবারও মনে হচ্ছে ভালো ব্যবসা হবে না। কারণ অনেকের হাতে টাকা নেই। একটু সামর্থ্যবান ক্রেতারা ঈদের পাঞ্জাবি অথবা শাড়ি কিনতে যাচ্ছেন সিল্কের শো রুমগুলোতে। উপহার মার্কেটের মালেকা গার্মেন্টেসের ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন জানালেন, গত দুই বছর তাঁদের ব্যবসা খারাপ গেছে। তাই এবার ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন। এখনই যে ক্রেতা আসছেন, তা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ঈদের কেনাকাটা এবার অনেকেই আগে আগে সারছেন। ঈদের দিন যত কাছে আসছে তত বিক্রি বাড়ছে। কাপড় ব্যবসায়ী শ্যামলী বেগম নামে থ্রি পিস কাপড় ব্যবসায়ী জানান, দুয়েল থ্রি পিস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা, লৌহজং ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০, গাউন জামা ১ হাজার ৪০০ টাকা, গাউন পাকিস্তানি থ্রি পিস ৪ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৫ হাজার ৬০০, বিবেক ১ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ২০০, অনন্য ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ঈদের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ কাঁচা বাদাম থ্রি পিস ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয়ে সান্তাহার বণিক সমিতির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু বলেন, এবার ব্যবসা ভালো হওয়ার কথা। বিশেষ করে গার্মেন্টস কাপড়ের পিক টাইম। করোনা পরিস্থিতি ভালো থাকায় এবার ঈদে বেচাবিক্রি বেশি হবে বলে আশা করছেন তিনি। তবে এতেও ব্যবসায়ীদের গত দুই বছরের লোকসান কাটবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।