আজিমপুর স্টাফ কোয়ার্টার থেকে ঢাবি ছাত্রীর লাশ উদ্ধার
প্রকাশ : 2021-06-06 11:21:32১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
রাজধানীর আজিমপুর স্টাফ কোয়ার্টারের একটি বাসায় ইশরাত জাহান তুষ্টি (২০) নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বাসাটির বাথরুম থেকে ইশরাতকে উদ্ধার করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
আজ রোববার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। ইশরাত জাহান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে সংযুক্ত ছিলেন। নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার নীলকণ্ঠপুর গ্রামের মো. আলতাফ হোসেনের মেয়ে তিনি। হল বন্ধ থাকার কারণে ইশরাত ও তাঁর এক বান্ধবী আজিমপুর স্টাফ কোয়ার্টারের ১৮ নম্বর ভবনের নিচতলায় থাকতেন।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্তব্যরত কর্মকর্তা এরশাদ হোসেন বলেন, ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফোনে খবর পেয়ে পলাশী ব্যারাকের স্টেশন অফিসার সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে যান। বাথরুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বাথরুমের ভেতর থেকে পানি পড়ার শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। পরে দরজা ভেঙে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ইশরাত জাহানকে উদ্ধার করেন। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইশরাতকে মৃত ঘোষণা করেন। ইশরাতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সাফায়েত আহমেদের বাড়িও নেত্রকোনায়। ইশরাতকে কোয়ার্টার থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল বিকেলে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে যাওয়ার সময় ইশরাত জাহান বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছিল। আগে থেকেই তার অ্যাজমা (হাঁপানি) ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। বৃষ্টিতে ভিজে শরীর খারাপ লাগায় কাল সে আর বাসা থেকে বের হয়নি। পরে রাতে যখন রুমের সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে, সে তখন ওয়াশরুমে যায়। ঠিক কখন সে ওয়াশরুমে গিয়েছিল, তা কেউ বলতে পারছে না।’
সাফায়েত আহমেদর আরও জানান, ‘ভোর সাড়ে পাঁচটা কি ছয়টার দিকে রুমমেটরা সাড়াশব্দ পায়, কিন্তু বাথরুমটি ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। আমি অন্য জায়গায় থাকি। ইশরাতের রুমমেট ও সহপাঠী রাহনুমা তাবাসসুম রাফি আমাকে ফোন দিলে আমিও সেখানে যাই। পরে ৯৯৯-এ ফোন দেওয়ার পর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এসে সাতটার দিকে অজ্ঞান অবস্থায় ইশরাতকে বাথরুম থেকে বের করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’
ইশরাতের লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। মৃত্যুর খবর শুনে আজ সকালেই আবাসিক শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান বঙ্গমাতা হলের প্রাধ্যক্ষ জাকিয়া পারভীন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ইশরাত জাহানের রুমমেট ও পারিবারিক সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, সে পলাশী এলাকায় সরকারি আবাসিক কোয়ার্টারে থাকত। আজ সকালে তাঁর রুমমেট বাথরুম বন্ধ দেখতে পায়৷ পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা এসে দরজা কেটে ইশরাতকে বের করে। সংশ্লিষ্ট দুই থানাকে অনুরোধ করা হয়েছে এখানে ঠিক কী ঘটেছে, তা তদন্ত করে বের করার জন্য।’