আগামী জুন পর্যন্ত সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই

প্রকাশ : 2023-01-01 12:32:36১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

আগামী জুন পর্যন্ত সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই

দেশে এখন চালের কোনো সংকট নেই। আগামী জুন পর্যন্ত সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই; বরং এবার ৪২ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল শনিবার গাজীপুরে ব্রি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়। গবেষণায় চালের মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে চালকলের মালিক ও খুচরা বিক্রেতাদের অতিরিক্ত মুনাফার বিষয়টি উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছর আমনের উৎপাদন সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ১ কোটি ৬৩ লাখ টন হবে। বোরো ২ কোটি ৪ লাখ টন ও আউশ ৩০ লাখ টন ধরে মোট উৎপাদন হবে ৩ কোটি ৯৭ লাখ টন। দৈনিক জনপ্রতি ৪০৫ গ্রাম করে চালের ভোগ হিসাব করলে ১৭ কোটি মানুষের জন্য বছরে চালের প্রয়োজন হবে ২ কোটি ৫১ লাখ ৩০ হাজার টন। প্রক্রিয়াজাত খাদ্য উৎপাদনের কাঁচামাল ও প্রাণিখাদ্য (নন-হিউম্যান) হিসেবে ১ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার টন ব্যবহৃত হবে। সুতরাং এরপর উদ্বৃত্ত থাকবে ৪২ লাখ টন।

ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর জানান, বাজারে কেন চালের দাম কমছে না, তা জানতে ব্রি মাঠপর্যায়ে গবেষণা করেছে। মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কারণ হিসেবে গবেষণায় উঠে এসেছে চালকলের মালিক ও খুচরা বিক্রেতাদের অতিরিক্ত মুনাফা করার বিষয়টি। চালকলের মালিকেরা কেজিতে ৮-১৪ টাকা লাভ করছেন। কৃষকের উৎপাদন খরচও কিছুটা বেড়েছে। পাশাপাশি ধানের দামও বেড়েছে। এ ছাড়া কিছু মিলার ও ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, করপোরেট গ্রুপগুলো চালের বাজারে ঢুকে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, অকালবন্যা ও অতিরিক্ত বৃষ্টিতে এ বছর বোরো ও আউশ উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। এ অবস্থায় আমনের উৎপাদন বাড়ানো অপরিহার্য হয়ে পড়ে। তাই চলতি মৌসুমে কৃষি মন্ত্রণালয় আমন চাষে ৫৯ লাখ হেক্টর জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ৬১ লাখ টন নির্ধারণ করে।

সামনের দিনগুলোতে চালের চাহিদা আরও বাড়বে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একদিকে জনসংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে কৃষিজমি কমছে। ভুট্টা, শাকসবজিসহ অন্যান্য ফসলেও জমির ব্যবহার বাড়ছে।

বাড়িতে যেসব সবজি হতো যেমন চালকুমড়া, তা–ও এখন মাঠে হচ্ছে। এসব কারণে ধান চাষের জমি কমছে। এই জটিল পরিস্থিতিতে চালের উৎপাদন বাড়াতে হলে গবেষণায় আরও জোর দিতে হবে। একই সঙ্গে উদ্ভাবিত জাতের দ্রুত সম্প্রসারণ করতে হবে।

বাম্পার উৎপাদনের পরও চালের দাম কেন কমছে না, তার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে বস্তুনিষ্ঠ গবেষণার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ব্রির গবেষণায় আমরা অনেকগুলো কারণ খুঁজে পেয়েছি। ব্রির পাশাপাশি অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানকেও এ বিষয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন।’