আওয়ামী লীগ নেতা হত্যায় ১৩ আসামির ফাঁসি
প্রকাশ : 2021-12-26 15:07:35১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জগৎ বাজারের ব্যবসায়ী ও নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক হত্যায় ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ও আট জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
রোববার দুপুরে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আলোচিত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছর করে জেল খাটতে হবে বলে বলা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন বসু মিয়া, কবির মিয়া, মোখলেছ, সাচ্চু মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া, শহিবুর রহমান শুক্কি, লিয়াকত আলী, ইউনুছ মিয়া, রহমত উল্লাহ ওরফে ফারিয়াজ মিয়া, শিথিল আহম্মেদ ওরফে ফাহিম আহম্মেদ, সাইফুল, আলী মিয়া ও পাভেল।
১৩ জনের মধ্যে পলাতক রয়েছেন রহমত উল্লাহ ওরফে ফারিয়াজ মিয়া , শিথিল আহম্মেদ ওরফে ফাহিম আহম্মেদ, সাইফুল, আলী মিয়া ও পাভেল।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন নুরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, রাসেল, মাজু মিয়া, গোলাপ মিয়া, সোহেল মিয়া, শাহজাহান ও বোরহান ওরফে রোহান। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড।
রায় ঘোষণার আগে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে মামলাটিতে কেরানীগঞ্জ কারাগারে আটক থাকা ১৬ আসামিকে মহানগর আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। মামলার ২১ আসামির মধ্যে এখনও পাঁচজন পলাতক।
মহানগর হাজতখানার পরিদর্শক আব্দুল হাকিম রায় উপলক্ষে অর্ধশতাধিক পুলিশ মোতায়েন করার কথা জানান। এ সময় আসামিদের অনেক স্বজন এসে আদালতের সামনে ভিড় করেন।
ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া জানান, অভিযোগপত্রে নাম থাকা ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জন আদালতে এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা মামলাটি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। তাই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করেন তিনি।
মামলা থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া উত্তর পৌরতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে জহিরুল হক নিজ গ্রাম পয়াগে ফিরছিলেন। পথে আসামি বসু মিয়া, হাবিবুর রহমান, শহিবুর রহমান ওরফে শুক্কি, কবির মিয়া, সাচ্চু মিয়া, মোখলেছ মিয়া, রুহান ওরফে বোরহান, শিথীল আহমেদ ওরফে ফাহিম আহমেদ (পলাতক), রহমত উল্লাহ ফারিয়াজ (পলাতক), মো. পাপেল (পলাতক), সাইফুল রহমান (পলাতক), ইউনুস মিয়া, লিয়াকত আলী, মো. সোহেল, মো. শাহজাহান, নুরুল ইসলাম, মাজু মিয়া, মো. রাসেল, মো. জাহাঙ্গীর, গোলাপ মিয়া, আলী মিয়া (পলাতক) পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনাস্থলের পাশে অবস্থান করছিলেন।
জহিরুল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দুটি মোটরসাইকেলে আসামিরা তার সিএনজি অটোরিকশা দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে আটকান। এ সময় সিএনজিতে থাকা জহিরুলকে তারা আক্রমণ করে রক্তাক্ত জখম করেন। আসামিরা সিএনজিচালক গোলাপ মিয়াকেও আঘাত করেন।
ঘটনার সময় অন্যদিক থেকে আসা আরেকটি সিএনজিরচালককে গোলাপ মিয়া বিষয়টি জানালে তিনি মোটরসাইকেল দুটি ধাওয়া করেন। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া উত্তর পৌরতলা সিএনজি স্ট্যান্ডে থাকা লোকজনের সহায়তায় মোটরসাইকেল দুটিসহ আসামি শিথীল ও ফারিয়াজকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়।
জহিরুল হক ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই কবির হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২১ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
নিহতের ছোট ভাই ছাব্বিহুল হক শিপলু জানান, ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মামলাটি দ্রুত বিচারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে গেজেটভুক্ত হয়ে বিচারের জন্য ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া থেকে বদলি হয়ে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।