আইসিইউ ফাঁকা নেই রাজধানীর ৭ হাসপাতালে

প্রকাশ : 2021-07-24 22:22:19১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

আইসিইউ ফাঁকা নেই রাজধানীর ৭ হাসপাতালে

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে চাপ তৈরি হয়েছে। এতে কমে গেছে এসব হাসপাতালের আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) শয্যাসংখ্যাও।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর ১৬টি করোনা হাসপাতালের সাতটিতেই কোনো আইসিইউ শয্যা ফাঁকা নেই। তিনটি হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলেও আইসিইউ শয্যার ব্যবস্থা নেই। বাকি ছয়টি হাসপাতালে মাত্র ৩৮টি খালি রয়েছে।

শনিবার (২৪ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রাজধানীতে করোনা ডেডিকেটেড ১৬টি সরকারি হাসপাতালের মধ্যে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতাল এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা হলেও সেখানে তাদের জন্য আইসিইউ শয্যা নেই।

আইসিইউ খালি নেই যেসব হাসপাতালে

রাজধানীর ১৬টি কোভিড সরকারি হাসপাতালের যে সাতটিতে আইসিইউ শয্যা খালি নেই, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল (১০ শয্যা), শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল (১৬ শয্যা), সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল (৬ শয্যা), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (২০ শয্যা), মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (২৪ শয্যা), শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (১০ শয্যা) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল (২০ শয্যা)। অর্থাৎ করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া রাজধানীর সরকারি বড় সাতটি হাসপাতালের আইসিইউর সব শয্যায় রোগী ভর্তি রয়েছেন।

আইসিইউ শয্যা খালি আছে যেসব হাসপাতালে

রাজধানীর কোভিড ডেডিকেটেড ১৬ হাসপাতালের ছয়টি হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা খালি আছে। কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের ২৬ শয্যার মধ্যে একটি, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ১৫ শয্যার মধ্যে পাঁচটি, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের আট শয্যার মধ্যে দুটি, টিবি হাসপাতালের ১৬ শয্যার মধ্যে ১২টি, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ১০ শয্যার মধ্যে চারটি, আর ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের ২১২ শয্যার মধ্যে ১৪টি শয্যা ফাঁকা রয়েছে। অর্থাৎ তিনটি বাদে ১৩টি হাসপাতালের ৩৯৩টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ফাঁকা রয়েছে মাত্র ৩৮টি।

এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হলে রোগীর বাড়তি চাপ সামলানো নিয়ে সংশয় রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের। এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ঢামেক হাসপাতালে যে সংখ্যক আইসিইউ আছে, সেগু‌লো ফাঁকা থাকার সুযোগ নেই। বর্তমানে এ হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছেন ৭২৪ জন। শয্যা খালি না থাকায় নতুন ক‌রে কো‌নো রোগী নি‌তে পার‌ছি না।

তিনি বলেন, প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০টা নতুন ক‌রোনা রোগী আসেন। শয্যা না থাকার পরও কয়েকজন রোগী ভর্তি নি‌তে হয়। কয়েকজন ক্রিটিক্যাল রোগীকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর কর‌তে হয়।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. খলিলুর রহমান বলেন, আমাদের এখানে করোনা রোগীদের জন্য ১০টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। সবগুলো শয্যা রোগীতে পূর্ণ। একমাস ধরে এ অবস্থা। আইসিইউ শয্যার জন্য অনেকেই অপেক্ষা করেন। কোনো একটি খালি হলে কমপক্ষে ১০-১৫ জন সিরিয়াল ধরেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে রোগীর সংখ্যা ২০০ থেকে ২৫০-এ ওঠানামা করছে।

করোনায় আরও ১৯৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬৭৮০

গত ২৪ ঘণ্টায় (২৪ জুলাই) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৪৬ জনে। এ সময় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৭৮০ জন। এতে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৪৪ জনে।

এর আগে, শুক্রবার ১৬৬, বৃহস্পতিবার ১৮৭, বুধবার ১৭৩, মঙ্গলবার ২০০ ও সোমবার সর্বোচ্চ ২৩১ জনের মৃত্যু হয়। রোববার ২২৫ ও শনিবার ২০৪ জন মারা যান। গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। এদিন মৃত্যু হয় ২০১ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ৭২৩ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৯ লাখ ৮৮ হাজার ৩৩৯ জন।