অবশেষে মুন্সীগঞ্জে পুলিশ ও সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মিঠু গ্রেফতার

প্রকাশ : 2024-05-12 10:49:19১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

অবশেষে মুন্সীগঞ্জে পুলিশ ও সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মিঠু গ্রেফতার

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পুলিশ ও সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় সেই বিতর্কিত চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠুকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ১১ মে শনিবার রাত ৯ টার দিকে ঢাকার শাহজাহানপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে দুপুরে মিঠুসহ হামলার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে সাংবাদিকরা।

জানা গেছে, প্রথম ধাপে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা নির্বাচনে গত ৮ মে সকাল সকাল ৯ টার দিকে হোসেনদি ইউনিয়নের ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রভাব বিস্তার করতে কেন্দ্রের বাহিরে জড়ো হচ্ছিলো কিছু লোক। এ সময় পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য সোহেল রানা সবাইকে সরে যেতে বলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যান মনিরুল হকের নির্দেশে সোহেলকে মারধর শুরু করেন তাঁর ভাতিজা তুরিন এবং তাদের লোকজন। এ সময় পাশ থেকে ছবি তুলছিলেন ও ভিডিও করছিলেন সাংবাদিক গোলজার হোসেন। পরে তাঁরা সোহেলকে রেখে গোলজারের ওপর হামলা করেন। তাঁর মুঠোফোন,পকেটে থাকা টাকা, প্রেস আইডি ও পর্যবেক্ষেক কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে মারধর করতে থাকে। পরে অন্য সাংবাদিকেরা এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। পরে সাংবাদিকেরা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে আশ্রয় নেন। সেখানে তাঁদের অবরুদ্ধ অবস্থায় মারধরের জন্য তেড়ে আসেন মনিরুল হক মিঠু ও তাঁর লোকজন।

মারধরের ঘটনার পর কেন্দ্রের ভেতরে মনিরুল হক ও তাঁর লোকজন প্রবেশ করার সময় সাংবাদিকদের হাত কেটে ফেলার হুমকি দেন। সেখানে মনিরুল হক হুংকার দিয়ে বলেন, দুই-চারজন সাংবাদিক মেরে ফেললে কী হবে? ওই দৃশ্য ভিডিও করতে গেলে মাইটিভি’র প্রতিনিধি শেখ মোহাম্মদ রতন ও প্রথম আলোর প্রতিনিধি ফয়সাল হোসেনের মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন মনিরুল হক মিঠু ও তার লোকজন।

পরে মারধরের শিকার সাংবাদিক গোলজার হোসেন সাংবাদিক সহকর্মীদের সহযোগীতায় গজারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। পরে ওইদিন বেলা আড়াইটার দিকে মনিরুলের লোকজন নিয়ে ওই কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেন। তাঁরা আনারস প্রতীকে সিল মারেন। এতে প্রায় ঘণ্টাখানেক ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। আবারও কেন্দ্রটি দখলের চেষ্টা করেন তাঁরা। এ সময় ওই কেন্দ্রের দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস) মো. বদিউজ্জামান এলে তাঁর গাড়িও ভাঙচুর করেন মিঠুর লোকজন। ঘটনা শুনে কেন্দ্রের ভেতরে থাকা পুলিশ সদস্যরা বাইরে বেড়িয়ে এলে তাদের উপর মুহুর্মুহু ইট-পাটকেল, লাঠি-সোটা, হাতবোমা নিক্ষেপ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পুনরায় ওই কেন্দ্রের দখল নেয়ার চেষ্টা করেন মিঠুর লোকজন। তাদের হামলায় সাদ্দাম (২৪) ও সোহাগের (২৫) নামে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে হোসেন্দি ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক (মিঠুকে) প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১৫০-২০০ জনকে আসামী করা হয়েছে। মনিরুল হক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আনারস প্রতীকের প্রার্থী আমিরুল ইসলামের সমর্থক ছিলেন। এ মামলা মো. মাসুম নামে মনিরুল হকের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পরে বৃহস্পতিবার (১০ মে) দিবাগত রাত ১১ টার দিকে উপজেলার হোসেন্দি ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠুকে প্রধান আসামি করে ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন হামলার শিকার সাংবাদিক গোলজার হোসেন। ওই মামলায় ও মনিরুল হক মিঠুকে প্রধান আসামি করা হয়।

এ ব্যাপারে গজারিয়া থানা অফিসার্স ইনচার্জ মো. রাজীব খান আমাদের কে বলেন, মনিরুল হক মিঠুকে ঢাকার শাহজাহানপুর এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে গজারিয়া থানা পুলিশ।

 

সান