অতীত স্মৃতির তিনটি কবিতা
প্রকাশ : 2021-04-25 09:01:50১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
[ মনে পড়ে আজ থেকে তেত্রিশ বছর আগে ১৯৮৮ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে সুনামগঞ্জ কালেক্টরেটে বিসিএস প্রশাসন ৭ম ব্যাচের দশ জন নবীন কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে যোগদান করি। এ সময় সুনামগঞ্জে একাধারে ট্রাইং ম্যাজিষ্ট্রেট, ট্রেজারি অফিসার আর নেজারত ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে দায়িত্বপালন করতেন কবি আব্দুল ওয়াহাব আন্ধারমানিক। অনেক সিনিয়র হয়েও তিনি আমাদের ভাই ডাকার জন্য হৃদয় প্রশস্ত করে দেন । স্যারের গুণে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে নিয়ে তখন আমি বেশ কটি কবিতা লিখি, যা প্রায় সবগুলোই কালের আড়ালে হারিয়ে যায়। পুরানো কাগজপত্রে পেয়ে গেলাম তিনটি কবিতা।]
আন্ধারমানিক-১
আমাদের কবি ভাই আন্ধার মানিক
তাকে নিয়ে সকলের গর্ব অধিক ।
আজকাল যাহা ঘটে এদিক ওদিক
কবি ভাই সব নিয়ে ভাবেন সঠিক ।
জীবনের দশদিক দেখাবার কবি
তার লিখা কবিতায় সমাজের ছবি ।
গাঁওকে ধরিয়া বুকে কবিতা রচিল
গাঁয়ের নামেতে নিজ নামটি রাখিল ।
আবদুল ওয়াহাব আসল যে নাম
আঁধার-মানিক নামে তাঁর নিজ গ্রাম।
আন্ধার ঘুচে যাবে আলোক মানিকে
সমাজ উজল হবে তাহার ঝিলিকে ।
মেঠোফুল যদিওবা তবু মহাদামী
কবিরূপে ধরাধামে তিনি অতি নামী।
আন্ধার মানিক খ্যাত কবি বড় ভাই
সুনামগঞ্জে এসে তার দেখা পাই ।
সমাজের ছবি থাকে তার কবিতায়
তার কাজে মানুষের মন আলো পায় ।
পঠন পাঠনে তার অতি বড় ঝোঁক
পাকা মেধা খাটি মনে হাসি কৌতুক ।
বচনে লিখনে বাণী অতি ক্ষুরধার
সহজে নিলেন কেড়ে হৃদয় আমার ।
তাঁর মতো মহাপ্রাণ বিস্মৃত মণি
আজো তাঁর স্নেহধারা কল্লোল শুনি।
আন্ধারমানিক-২
বড়ভাই কবি আন্ধারমানিক
আমাদের গর্বের ধন
কবিতায় তিনি আঁকিয়া দেখান
মানুষের আলো ছায়া মন ।
সেদিন সবাই তাহাকে ঘিরিয়া
শুনছি কাব্যকথা
সহসা বলেন যমুনার বিয়ে
তাই তার মনে ব্যথা ।
আমরা ভাবিনু যমুনা তাহার
হয়তোবা প্রেমিকা কোনো
বিয়ে হয়ে যায় পরনর সনে
তাই তার ব্যথা হেনো ।
ডাকেন ইহারে হাঁকেন উহারে
বলেন করবে কিযে
যমুনার বিয়ে হবে বলে তার
মন নাহি বসে কাজে ।
অবশেষে তিনি রহস্যজট
নিজেই ছড়ান হেসে
যমুনার বিয়ে একখানা বই
পড়তেই হবে এসে ।
বইপড়া যার এতোই অধির
আগ্রহ ভালবাসা
এই আমাদের বড়ভাই কবি
আঁধারে আলোর আশা ।
আন্ধারমানিক-৩
ভাল লাগা যার চেতনার মুলে
কিসের অভাব তার
শূন্য পেয়ালা অমৃত রসে
ভরে যায় প্রতিবার ।
আমাদের মাঝে বিরাজি যে জন
বিহারে অলকধাম
মানব কাননে অপরূপ ফুল
অনেক তাহার দাম ।
অবহেলে আর অক্লেশে তার
অবাক লিখনী চলে ।
যা কিছু লিখেন সোনা হয়ে যায়
ছেয়ে যায় ফুলদলে ।
তিনি আমাদের আন্ধারমানিক
কাব্যদেবীর বর
যিনি আমাদের অকুলের কুল
বড় ভাই কবিবর ।