দ্বিতীয় দিনের মতো নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে দুর্ভোগে যাত্রীরা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২২, ১১:৩৪ |  আপডেট  : ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৬

বরিশালে দশ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছে নৌযান শ্রমিকরা। বন্ধ রয়েছে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটের সকল লঞ্চ চলাচল। এছাড়াও দেশের সবকটি নৌবন্দরে বন্ধ রয়েছে পণ্য খালাস ও উঠা-নামা।রোববার (২৭ নভেম্বর) থেকে দশ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে এই কর্মবিরতি পালন করছেন সারাদেশের দুই লক্ষাধিক নৌযান শ্রমিক। 

নৌযান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ও নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগ পত্র পরিচয় পত্র সার্ভিস বুক প্রদান সহ দশ দফা দাবি হলো: নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দান, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদানসহ শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, খাদ্য ভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, চট্টগ্রাম থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী অপরিণামদর্শী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা, বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপর ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিলকরণ, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস দেয়াসহ ভারতীয় সীমানায় সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করে সকল লাইটার জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা। 

যতদিন তাদের এই দাবি-দাওয়া পূরন না হবে ততদিন কর্মবিরতি চলবে বলেও জানান তারা। এদিকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটের সকল লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পরেছেন যাত্রীরা। 

সোমবার (২৮ অক্টেবর) সকাল থেকে ভোলার ইলিশা, ভেদুরিয়া লঞ্চঘাটসহ জেলার কোনও ঘাট থেকে অভ্যন্তরীণ এবং দূরপাল্লার রুটের লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। এসব ঘাটে অনেক যাত্রী আসলেও তারা গন্তব্যে যেতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়েছেন। যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত ফিরে গেছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন নারী ও শিশুরা।

যাত্রী সামাদ রবিন বলেন, ‘ভোলায় এসেছিলাম বেড়াতে। এখন বরিশাল যাবো, কিন্তু কোনও লঞ্চ পাচ্ছি না। ছোট ট্রলারে কীভাবে যাবো। এতে তো অনেক ঝুঁকি।’ যাত্রী জুয়েল বাবু ও আশিক বলেন, ‘আমরা জানতাম না যে লঞ্চ ধর্মঘট চলছে। ঘাটে এসে দেখি এমন অবস্থা। এখন চরম দুর্ভোগে পড়েছি।’

এদিকে, ভেদুরিয়া ঘাটে দেখা গেছে, কিছুটা ভিন্ন চিত্র। ইঞ্জিনচালিত ছোট ছোট ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে এসব নৌযানে ভাড়া নিচ্ছে অনেক বেশি।

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন বরিশাল বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ আবুল হোসেন বলেন, ‘১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে। লঞ্চমালিক পক্ষ আমাদের এখনও ডাকেনি। তারা দাবি না মানলে আমাদের কর্মবিরতি চলবে।’

শ্রমিকদের ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, ন্যূনতম বেতন ২০ হাজার টাকা, শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র প্রদান, শ্রমিকদের নিরাপত্তা, নৌদুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, চাঁদাবাজি বন্ধ, রাতে নৌযান চলাচল শিথিল করা, ভারতগামী জাহাজ ল্যান্ডিং করার পাস এবং কল্যাণ তহবিল গঠন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত