ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি , না মানলে কঠোর কর্মসূচি
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২২, ১১:০৭ | আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩২
গত ৩ দিন ধরে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা ছিল রণক্ষেত্র। পরিস্থিতি এই ঠান্ডা তো এই উত্তপ্ত। কিছুক্ষণ পরপরই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছিলেন ব্যবসায়ী ও ছাত্ররা। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আপাতত শান্ত আছে নিউমার্কেট এলাকা। এর মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ দফা দাবি জানিয়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ফুটপাত দখলমুক্ত, অবৈধ কার পার্কিং উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করাসহ দশ দফা দাবি করেছে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। বুধবার ( ২০ এপ্রিল) ঢাকা কলেজের অডিটোরিয়ামে রাত ১১ঃ২০ এ সংবাদ সম্মেলন করেছে ঢাকা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচিরও কথা তারা। শিক্ষার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মো. মাসুম বিল্লাহ ও সুজয় বালা।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলনসহ সব ধরণের যৌক্তিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। ১৮ এপ্রিল দিবাগত রাতে নিউমার্কেটের দুটি দোকানের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত করা হয়। এই ঘটনা ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ঢাকা কলেজের সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও হকাররা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বিতর্কিত ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এ সময় পুলিশের রাবার বুলেট ও টিয়ারশেলে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।
পরদিন শিক্ষার্থীরা রাতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করে কলেজের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করলে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও হকাররা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। এরপর ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দুদিনের এ ঘটনায় ঢাকা কলেজের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।
শিক্ষার্থীরা দাবি করে বলেন, ডিএমপির রমনা জোনের এডিসি হারুন-অর-রশিদ ও নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স.ম. কাইয়ুম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করেই ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে বিতর্কিত ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে—
১. এই ন্যক্কারজনক হামলার উস্কানিদাতা, ইন্ধনদাতা ও হামলাকারীদের তদন্ত সাপেক্ষে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সব দায়ভার নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিতে হবে।
৩. হকারদের হামলায় নিহত পথচারী নাহিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৪. রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
৫. দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ডিসি, এডিসি ও নিউ মার্কেট থানার ওসিকে প্রত্যাহার করতে হবে এবং পুলিশ প্রশাসনকে কলেজ প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
৬. প্রতিটি মার্কেট ও দোকানে সিসিটিভি স্থাপন করতে হবে।
৭. প্রতিটি মার্কেটে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আচরণ বিধি প্রণয়ন ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন।
৮. ফুটপাত দখলমুক্ত, অবৈধ কার পার্কিং উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।
৯. ক্রেতা হয়রানি, নারীদের যৌন হয়রানি বন্ধে একটি বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করে ক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
১০. চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ও নিউ সুপার মার্কেটে ঢাকা কলেজের সম্পদ লিজ বাতিল করে ফিরিয়ে দিতে হবে।
অতি দ্রুত এসব দাবি মেনে না নেয়া হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান শিক্ষার্থীরা।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত